প্রতিদিন ছয় লাখ মানুষকে টিকা দিতে হবে: আইএমএফ

প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২১, ১৫:৫১

সাহস ডেস্ক

প্রতিদিন ছয় লাখের বেশি মানুষকে টিকা দিতে পারলেই আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় আসবে। গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক আপডেট প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনতে প্রতিদিন শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে হবে। আইএমএফের এ হিসাব ধরলে প্রতিদিন ছয় লাখের মতো মানুষকে টিকা দিতে হবে।

আইএমএফের প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্তের ভান্ডারে এ–সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া হয়েছে। দেশের পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনতে প্রতিদিন কত শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকা দিতে হবে, সে চিত্র দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে টিকা দেওয়া শুরু করলেও মাঝখানে টিকার সরবরাহসংকটে বেশি কিছুদিন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে কয়েক দিন আগে থেকে আবারও টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

টিকা দেওয়ায় কারা এগিয়ে গেল-এর একটি চিত্রও আইএমএফ তুলে ধরেছে। আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উন্নত দেশগুলো তাদের ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার দুটি করে ডোজ দিয়ে ফেলেছে। উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো ১১ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকা দিয়েছে। আর নিম্ন আয়ের উন্নয়নশীল দেশগুলোয় এই হার মাত্র ১ শতাংশ। উন্নত দেশগুলো দ্রুত টিকা দেওয়ায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সহায়তা করছে। অন্যদিকে, টিকা দেওয়ার হার কম থাকায় ভারতসহ কিছু দেশ করোনার নতুন ঢেউয়ে বিপাকে পড়েছে। এ কারণে এখন করোনা মহামারি দুটি ধারায় চলছে।

এদিকে ২০২১ সালে বিশ্বের মোট অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। সংস্থাটি বলছে, করোনা সংকটের প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিকভাবে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হচ্ছে। কিন্তু উন্নত দেশ, উদীয়মান অর্থনীতির দেশ এবং নিম্ন আয়ের উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতিতে ব্যবধান বাড়ছে। এর কারণ, উন্নত দেশগুলোয় তুলনামূলক বেশি জনগোষ্ঠীকে ইতিমধ্যে টিকা দেওয়া হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে উদীয়মান ও নিম্ন আয়ের উন্নয়নশীল দেশগুলো। এ কারণে ওই সব দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি কম।

সেখানে আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সালে বৈশ্বিক গড় প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে। গত এপ্রিল মাসে প্রকাশিত আউটলুকে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, তা অপরিবর্তিত রেখেছে আইএমএফ।

আইএমএফ আরও বলেছে, ‘যতক্ষণ কোভিড মহামারিকে আমরা ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে না পারব, ততক্ষণ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত নয়।’ আইএমএফ মনে করে, করোনার টিকা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে দুটি মেরু তৈরি করছে। যেসব দেশ তাদের জনগোষ্ঠীর বড় অংশকে টিকা দিতে পারছে, তারা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের দৌড়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলো তুলনামূলকভাবে বেশ এগিয়ে আছে। এবার দেখা যাক উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি কেমন হবে?

আইএমএফের পূর্বাভাস বলছে, ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৭ শতাংশ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে। যুক্তরাজ্যেও একই হারে প্রবৃদ্ধি হবে। আর ইউরো অঞ্চলে প্রবৃদ্ধি হার ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এ ছাড়া জাপানে ২ দশমিক ৮ শতাংশ, চীনে ৮ দশমিক ১ শতাংশ, ভারতে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। একমাত্র চীন ছাড়া বাকি প্রায় সব বড় অর্থনীতির দেশ চলতি বছরে নেতিবাচক (সংকুচিত) প্রবৃদ্ধি থেকে বেরিয়ে আসবে।

আইএমএফের নতুন এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। তবে দেশভিত্তিক আলাদা তথ্যকণিকায় পূর্বাভাস হিসেবে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত