পঞ্চম দিনের লকডাউনে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৫৫৫

সবাই বের হচ্ছে কোনও না কোনও জরুরী কাজে

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২১, ২৩:১৩

সাহস ডেস্ক
ছবি: সজিব তুষার/সাহস

দেশ জুড়ে চলছে করোনাভাইরাসের কঠোর বিধিনিষেধ। তবে রাজধানীর সড়কগুলোতে বেড়ে চলেছে জনসমাগম। অনেকেই বের হচ্ছেন বিনা প্রয়োজনে। আজ মঙ্গলবার বিধিনিষেধের পঞ্চম দিনে রাজধানীতে ৫৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গাড়ি নিয়ে বের হওয়ায় মামলা ও জরিমানা করা হয়েছে অনেকের নামে।

ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আজ মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অকারণে যারা ঘর থেকে বের হয়েছে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৩৬ জনকে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৭৫ টাকা জরিমানা করেছেন ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদিকে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী ৪৯৭টি গাড়িকে জরিমানা করা হয় ১১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।

ছবি: সজিব তুষার/সাহস

প্রতিনিধি সূত্রে জানা যায়- এলিফ্যান্ট রোড, পান্থপথ, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, গুলশান, নাবিস্কো, বাড্ডা, তেজগাঁও এলাকার রাস্তায় প্রাইভেট কার, রিকশা, খাদ্যসামগ্রী বহনকারী যান, মোটরসাইকেল, অ্যাম্বুলেন্সসহ ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। পায়ে হাটা মানুষও দেখা যাচ্ছে জায়গায় জায়গায়।

সড়কের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বসেছে চেকপোস্ট। একটু অসাবধানতায় গুণতে হচ্ছে জরিমানা। জায়গায় জায়গায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনা দেখা যায়। যথার্থ কারণ দর্শাতে না পারলে জরিমানা করা হচ্ছে অনেককে। ঠিকঠাক কারণ দেখানো ছাড়া ছাড় পাচ্ছেন না কেউই। এছাড়া বিধিনিষেধ মানাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাইরেন বাজিয়ে টহল দিতে দেখা যায়।

সরেজমিনে কাওরান বাজার, মগবাজার, ওয়ারলেস মোড়ে দেখা যায়, প্রাইভেট গাড়ি, রিক্সা বেড়েছে বিগত দিনগুলোর পরিমানে। পুলিশের মতে, যাকেই সন্দেহজন মনে করে আটকানো হয় তারই হাতে প্রেসক্রিপশন নাহয় ডাক্তার দেখাতে বের হয়েছে।

মগবাজার চেকপোস্টে অবস্থানরত রমনা থানার টি আই তারিকুল আলম বলেন, মগবাজার মোড়ের চেকপোস্টে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ৪টি মামলা হয়েছে। এর সাথে অন্তত পনেরো হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে পাঁচ জনকে।

ছবি: সজিব তুষার/সাহস

ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আরও বলেন, সরকার জরুরী প্রয়োজন শব্দটা ব্যবহার করেছে। আপনি জরুরী প্রয়োজনে বের হতে পারবেন। কিন্তু মানুষের তো জরুরী প্রয়োজনের অভাব নেই। অপ্রয়োজনে বের হওয়া একটা মানুষও স্বীকার করেন না তারা জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বের হয়েছেন। এমনভাবে সবাই কোনও না কোনও জরুরী প্রয়োজন বের করেই বাইরে বের হচ্ছেন। পুরাতন একটা প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে একটা লোক যদি বলে আজকে তার এপোয়েন্টম্যান্ট আছে মানবিক জায়গা থেকেই তো আর আটকাতে পারিনা।

উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে আজ জানিয়েছে, গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৯২৫ জন। সব মিলিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১১ লাখ ৯৪ হাজার ৭৫২। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৯ হাজার ৭৭৯ জনের। আর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ২২ হাজার ৪১৪ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৪৩৯ জন।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুলাই বিধিনিষেধ আরোপ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আদেশে ১৪ জুলাই মধ্যরাত  থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছিল ঈদের কারণে। ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে নতুন করে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় এই  ঘোষণায়। আগামী ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।

সাহস২৪.কম/এসটি/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত