অপুষ্টি থাকলে করোনা তীব্র হয়

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২১, ১৫:০৮

সাহস ডেস্ক

করোনার ফলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাঁধাগ্রস্থ হয়। আর যদি অপুষ্টিজনিত সমস্যা থাকে তাহলে জটিলতা অনেক গুণ বেড়ে যায়। অপুষ্টির ইতিহাস আছে, এমন শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা করোনায় আক্রান্ত হলে তাদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি বা তাদের রোগের লক্ষণ তীব্র হয় বলে জানিয়েছে বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী 'ন্যাচার'।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এই সাময়িকী গত সপ্তাহে তাদের এক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, করোনা বয়স্ক ব্যক্তিদের অপুষ্টি উসকে দিচ্ছে এবং নানা শারীরিক জটিলতা তৈরি করছে। এটা গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে অপুষ্টি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমাচ্ছে, হাসপাতালে অবস্থান দীর্ঘায়িত করছে, মৃত্যু বাড়াচ্ছে। অপুষ্টিতে ভোগা ব্যক্তি যেকোনো রোগে আক্রান্ত হলে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটে। করোনাও এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়।

'লং-টার্ম ইফেক্টস অব ম্যালনিউট্রিশন অন সিভিয়ারিটি অব কোভিড-১৯' শিরোনামের এই প্রবন্ধের গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের ৫৬টি হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেয়া ৮ হাজার ৬০৪ জন শিশু ও ৯৪ হাজার ৪৯৫ জন বয়স্ক ব্যক্তির তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। শিশুদের গড় বয়স ছিল ৬ বছর। অন্য ব্যক্তিদের বয়স ছিল ১৮ থেকে ৭৮ বছরের মধ্যে। তারা ২০২০ সালের মার্চ থেকে জুনের মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। পুষ্টির ইতিহাস জানতে গবেষকেরা ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এসব রোগীর স্বাস্থ্য তথ্য ঘেঁটে দেখেন।

হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে ৫১৭ জনের জীবন রক্ষায় ভেন্টিলেটর ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে ১৮টি শিশু মারা যায় আর তিনজনের ভেন্টিলেটর ব্যবহারের আগেই মৃত্যু ঘটে। গবেষকেরা ভেন্টিলেটর ব্যবহার করা ও না করা মোট ৫২০ জন শিশুকে তীব্র করোনার লক্ষণের শ্রেণিভুক্ত করেন। শিশুদের মধ্যে ১৬৪ জনের বা ১ দশমিক ৯ শতাংশের অপুষ্টির ইতিহাস ছিল বলে জানা যায়।

গবেষকেরা বলছেন, মাঝারি তীব্রতায় ভোগা শিশুদের ১ দশমিক ৫ শতাংশের অপুষ্টি ছিল। আর তীব্র লক্ষণে ভোগা শিশুদের ৭ দশমিক ৫ শতাংশের অপুষ্টি ছিল।

বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ হাজার ৪২৩ জনকে করোনার তীব্র লক্ষণযুক্ত রোগীর কাতারে ফেলা হয়। তাদের মধ্যে ৯ হাজার ৯৫৩ জনের জীবন রক্ষায় ভেন্টিলেটর ব্যবহার করা হয়েছিল। বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে ৩ হাজার ২৩৬ জনের মৃত্যু ঘটে। বয়স্ক ব্যক্তিদের ২০১০ জনের বা ২ দশমিক ১ শতাংশের অপুষ্টির ইতিহাস ছিল। মাঝারি তীব্রতায় ভোগা বয়স্ক ব্যক্তিদের ১ দশমিক ৮ শতাংশের অপুষ্টি ছিল। আর তীব্র লক্ষণে ভোগা বয়স্ক ব্যক্তিদের ৪ শতাংশের অপুষ্টি ছিল।

সামাজিক দূরত্ব, আংশিক বা সর্বাত্মক লকডাউন, কোয়ারেন্টিনের বিরূপ প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে, যা অপুষ্টির ঝুঁকি বাড়িয়েছে। অনেক পরিবারের আয় কমে গেছে। স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক শিশুর পরিপূরক খাদ্য পাওয়া বন্ধ হয়েছে। লকডাউনের কারণে খাদ্য সরবরাহও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এসব অপুষ্টি বাড়িয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত