২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ৩৬ ডেঙ্গু রোগী

প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২১, ১৮:৫৮

সাহস ডেস্ক
ফাইল ছবি

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৩৬ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এ তথ্য জানিয়েছে। বুধবার (৭ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এসব রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ১৫১ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ১৪৯  এবং ঢাকার বাইরে দুজন ভর্তি আছেন বলে কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে।

সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন বছরে এখন পর্যন্ত ৬০১ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।  অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ৪৫০ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তাদের মধ্যে কেউ এখনও মারা যাননি।

সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ১২টি মৃত্যুর তথ্য পাঠানো হয়েছে। আইইডিসিআর ৯টি ঘটনার পর্যালোচনা সমাপ্ত করে সাতটি মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে।

২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় এবং সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে মশাবাহিত এ রোগে তখন ১৭৯ জন মারা যান।

ডেঙ্গু জ্বরের উৎপত্তি ডেঙ্গু ভাইরাস দ্বারা এবং এই ভাইরাস বাহিত এডিস ইজিপ্টাই নামক মশার কামড়ে। স্বল্প ক্ষেত্রে অসুখটি প্রাণঘাতী ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে পরিণত হয়। যার ফলে রক্তপাত, রক্ত অনুচক্রিকার কম মাত্রা এবং রক্ত প্লাজমার নিঃসরণ অথবা ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রূপ নেয়। যেখানে রক্তচাপ বিপজ্জনক মাত্রায় কম থাকে।

ডেঙ্গু ছড়ায় এডিস মশার কারণে। ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশা কোনো ব্যক্তিকে কামড়ালে সেই ব্যক্তি চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। এবার এ আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো জীবাণুবিহীন এডিস মশা কামড়ালে সেই মশাটিও ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশায় পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে থাকে।

ডেঙ্গুতে সাধারণত তীব্র জ্বর এবং সেই সাথে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। জ্বর ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়। শরীরে বিশেষ করে হাড়, কোমর, পিঠসহ অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা হয়। এ ছাড়া মাথাব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা হয়। গায়ে রেশ হতে পারে। এর সাথে বমি বমি ভাব হতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ

ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধের মূল মন্ত্রই হল এডিস মশার বিস্তার রোধ এবং এই মশা যেন কামড়াতে না পারে, তার ব্যবস্থা করা। বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড়, জঙ্গল, জলাশয় ইত্যাদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। যেহেতু এডিস মশা মূলত এমন বস্তুর মধ্যে ডিম পাড়ে যেখানে স্বচ্ছ পানি জমে থাকে, তাই ফুলদানি, ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত টায়ার ইত্যাদি সরিয়ে ফেলতে হবে। ব্যবহৃত জিনিস যেমন মুখ খোলা পানির ট্যাংক, ফুলের টব ইত্যাদিতে যেন পানি জমে না থাকে, সে ব্যবস্থা করতে হবে।

এডিস মশা সাধারণত সকাল ও সন্ধ্যায় কামড়ায়। তবে অন্য সময়ও কামড়াতে পারে। তাই দিনে ঘরের চারদিকে দরজা জানালায় নেট লাগাতে হবে। দিনে ঘুমালে মশারি টাঙিয়ে অথবা কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমাতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত