ঈদের ছুটিতেও থাকতে পারে বিধিনিষেধ: প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২১, ২০:৫৩

সাহস ডেস্ক

দেশে করোনা সংক্রামণ বৃদ্ধি পাওয়ায় অতিতের সব রেকর্ড ভেঙে আজ সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্ত হয়েছে। করোনার এই সংক্রামণ নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশে চলছে কঠোর লকডাউন। এদিকে ঘনিয়ে আসছে ঈদ-উল-আযহার সময়। তবে ঈদের ছুটির সময় চলমান বিধিনিষেধ থাকবে কি না, সেটি করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। চলমান ১৪ দিনের বিধিনিষেধের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। আজ সোমবার বিকেলে একথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ঈদের আগেও চলমান বিধিনিষেধ থাকবে কি না, সেটা পরিস্থিতি বলে দেবে। চলমান ১৪ দিনের বিধিনিষেধ পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে। তবে কিছু বিধিনিষেধ অবশ্যই থাকবে। কারণ, গত ঈদের সময় বাড়ি যাওয়ার কারণেই সংক্রমণ বেড়েছিল। এবার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হতে পারে যে যেখানে আছেন, সেখানে যেন ঈদ করেন।

এদিকে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে আজ সোমবার আদেশ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী ১৪ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে এ বিধিনিষেধ।

করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের ঈদ ব্যবস্থাপনা কেমন হবে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঈদ আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। তাই আমরা এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছি। আমরা দুই সপ্তাহ ধরে যে অর্জনটা করব, সেটা যেন তৃতীয় সপ্তাহে গিয়ে নষ্ট না হয়, সে বিষয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা ইতোমধ্যে শুরু করেছি।

তিনি বলেন, একটি সুপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে আমরা ঈদের সপ্তাহ ট্যাকেল করার চেষ্টা করব। আমরা দেখছি কীভাবে কী করা যায়।

এবার ডিজিটাল কোরবানির হাটের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মানুষ যাতে সেখানে নির্ঝঞ্ঝাটভাবে কেনাকাটা করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। দাম ও ওজনের সমন্বয় থাকবে। আর যদি সশরীর হাট করতে হয়, তাহলে সেগুলো খুবই নিয়ন্ত্রিত হবে। প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ আলাদা থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে। নির্দিষ্টসংখ্যক মানুষের বাইরে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। সবাইকে সংযতভাবে ও সুপরিকল্পিতভাবে কোরবানির হাট করতে হবে। আর কীভাবে কী করব তা আগামী ১২-১৩ জুলাইয়ের মধ্যে সেই অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন হবে।

তিনি বলেন, বিধিনিষেধের ১৪ দিনে সুফল পেলেও আমাদের কার্যক্রম খুবই সুনিয়ন্ত্রিত ও সুপরিকল্পিত হবে। এই অবস্থাটা ঈদ পর্যন্ত রাখা গেলে ভাল হতো। তবে আমাদের সবকিছু চিন্তা-ভাবনা করতে হচ্ছে। যদিও কিছুটা রিল্যাক্স হয় সেটাও সুপরিকল্পিতভাবে হবে।

তিনি আরো বলেন, সংক্রমণ কমিয়ে আনতে যা করা দরকার আমরা করব। মোটামুটি সংক্রমণ কমিয়ে আনতে আমাদের এক মাস প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ঈদটা যেহেতু সামনে আছে সেটা খুবই সংযতভাবে আমাদের পার করতে হবে। তৃতীয় সপ্তাহটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেটা ধরেই আমরা কাজ করব। চ্যালেঞ্জগুলো আমরা কীভাবে সুন্দরভাবে ম্যানেজ করতে পারি সেই পরিকল্পনা করছি।

দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় ২১টি নির্দেশনা দিয়ে সরকার গত ১ জুলাই থেকে সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে। বিধিনিষেধের পাঁচদিন পার হতে চললেও করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। কিন্তু সেই বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল বুধবার (৭ জুলাই) মধ্যরাতে। এরমধ্যে বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর সুপারিশ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। এই প্রেক্ষাপটে বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।

সবশেষ আজ সোমবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ও শনাক্তের হরা বেড়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় একদিনে সর্বোচ্চ ১৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৯ হাজার ৯৬৪ জন। আজ বিকেলে এখব জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত