পঞ্চগড় সদর হাসপাতাল

আইসিইউ ও অক্সিজেন প্ল্যান্টেশনের সংকটে বিপাকে রোগীরা

প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২১, ০৩:১৪

ডিজার হোসেন বাদশা

করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবায় নিদারুণ সংকটে দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়। জেলার একমাত্র আধুনিক সদর হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা নেই। নেই অক্সিজেন প্লানটেশন। তাই গুরুতর রোগীরা চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন দিনাজপুর অথবা রংপুরের হাসপাতালে। এতে খরচ বেড়ে যাবার পাশাপাশি হয়রানীর শিকার হচ্ছেন তারা।

স্থানীয়রা বলছেন, করোনা শনাক্তের পর পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হন তারা। আইসিইউ না থাকার কারণে ফুসফুস আক্রান্ত হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের দিনাজপুরে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেন। কারণ হাসপাতাল কতৃপক্ষ ঝুঁকি নিতে চাননা। দিনাজপুরে চিকিৎসা নেয়ার কারণে তাদের বিপুল পরিমান অর্থ ব্যায় করতে হচ্ছে। পঞ্চগড় হাসপাতালে আইসিইউ থাকলে এতোটাকা ব্যায় হতোনা।

হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ এই জেলায় দিন দিন বাড়ছে । এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৪১১ জন । গত জুন মাসে ২৩০ এবং চলমান জুলাই মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩০ জন । এদের মধ্যে মৃত্যু বরণ করেছেন ৬ জন। দেশে প্রথম করোনা ভাইরাস সনাক্তের পর এই জেলায় প্রথম ঢেউয়ে আক্রান্ত হন ৭ শ ৭৯ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু বরণ করেন ২০ জন।

বর্তমানে ৩০৮ জন করোনা আক্রান্ত রোগী আইসোলেশনে রয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৮ জন রোগী। চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯৭ জন।

জানাগেছে বর্তমানে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জন রোগীর সেম্পল নেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে করোনা পজেটিভ আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। আইসিইউ এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় জটিল আকার ধারণ করা  রোগীদের পাঠানো হচ্ছে রংপুর অথবা দিনাজপুর।

সূত্রে জানা যায়, কোভিড ভাইরাস ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়লেই রোগীদের বাইরে পাঠানো হচ্ছে। এ কারণে আক্রান্ত রোগীদের ব্যায় বাড়ছে। একদিকে কোভিড আক্রান্তের ফলে পারিবারিক দু:শ্চিন্তা অন্যদিকে চিকিৎসার জন্য বিপুল পরিমান অর্থ ব্যায়ের কারণে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়ছেন। অনেকে তাই করোনা টেষ্ট করাতে চান না। গোপন রেখেই চলাফেরা করছেন।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডাঃ ফজলুর রহমান জানান, আইসিইউ নির্মাণ অনেক সময়ের ব্যাপার । তাছাড়া করোনারোগীর প্রধান সমস্যা অক্সিজেন , সেই অক্সিজেন সমস্যা সমাধানের জন্য ইতিমধ্যে একটি সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান বসানো হয়েছে।  এটি নির্মানাধীন । আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে এই প্লান্ট এর কাজ শেষ হবে। অক্সিজেন প্লান্ট বসানো হলে ৬ থেকে ১০ হাজার  লিটার অক্সিজেন কন্টেইনার বসানো হবে।  এতে ২০ জন রোগীকে অক্সিজেন সেবা দেয়া যাবে ।

উল্লেখ্য, গত মাসের ২৪ তারিখ থেকে পুনরায় সিনোফার্ম এর করোনা টিকা দেওয়া শুরু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এবারে তিন ক্যাটাগরিতে শিক্ষার্থী, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রবাসীদের  টিকা প্রদান করা হচ্ছে । এরইমধ্যে ২শ ৩১ জনকে টিকা প্রদান করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত