ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং

খুলনায় প্রস্তুত ৪০৯ আশ্রয় কেন্দ্র

প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২২, ১৩:৪০

শেখ নাদীর শাহ্,খুলনা

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে খুলনার আকাশে মেঘ ও মাঝে মাঝে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। রবিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে আকাশে মেঘের সৃষ্টি হয়। বিকালে কিছু স্থানে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটসহ উপকূলের ১৯টি জেলায় আঘাত হানতে পারে বলে আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

খুলনা আবহাওয়া অফিস ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, সাগরে রাতে সিত্রাং নামের ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হতে পারে। তবে খুলনাসহ উপকূলীয় এলাকায় এর প্রভাব শুরু হয়েছে। আজ সকাল থেকে উপকূল এলাকা মেঘলা রয়েছে। সেই সাথে হালকা গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী ২৫ তারিখ সকালে উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করতে পারে। এর প্রভাবে সোমবার রাতে ঝড়ো বৃষ্টি হতে পারে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি সোমবার রাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে রূপ নেবে। তাই বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে শিগগির নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমুদ্র বন্ধরগুলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত আপাতত ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত অব্যাহত থাকবে। গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার পর সমুদ্র বন্দরগুলোতে সতর্ক সংকেত বাড়িয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানি এড়াতে জেলার ২ লাখ ৭৩ হাজার ৮শ ৫০ জনের জন্য ৪০৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে দাকোপে ১১৮টি, বটিয়াঘাটায় ২৭টি, কয়রায় ১১৭টি, ডুমুরিয়ায় ২৫টি, পাইকগাছায় ৩২টি, তেরখাদায় ২২টি, রূপসায় ৩৯টি, ফুলতলায় ১৩টি ও দিঘলিয়ায় ১৬টি।

ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সকল জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি আকারে বড় হলেও দুর্বল হবে।

খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। জরুরি শুকনা খাবার প্রস্তুত রাখা, সাইক্লোন শেল্টারে যারা আসবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আগতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য কাজ চলছে।

তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিশেষ করে কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে, তাদের যাতে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া যায়-সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সোমবারের মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হবে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২০ মে সুপার সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতে খুলনার কয়রা, পাইকগাছা, সাতক্ষীরার, শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলা এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০০৯ সালের ২৫ মে আম্ফান নামক দুর্যোগে খুলনা জেলার দাকোপে ৬৫ জন মৃত্যুবরণ করে। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরে জেলার কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত