বন্যাঃ বাস্তুচ্যুত বাংলাদেশ ও ভারতের কয়েক লক্ষ মানুষ

প্রকাশ : ২৩ মে ২০২২, ১৯:৩১

সাহস ডেস্ক

চলতি বছরের বর্ষার আগেই ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্টি হয়েছে বন্যা, ভূমিধস ও বজ্রপাতের মত ঘটনা। গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশ ও ভারতে অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। ডুবেছে অসংখ্য ফসলী জমিন। ভিটে মাটি হারিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। এ বন্যায় প্লাবিত হয়েছে দুই দেশের বহু গ্রাম ও শহর। নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে বলেছে, ভারতের আসাম রাজ্যে (বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী) বন্যায় রেললাইন, সেতু ও রাস্তা তলিয়ে গেছে। রাজ্যের ৩৩ জেলার ৩১টিই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানে ৭ লাখের বেশি মানুষ সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এসব ঘটনায় বহু মানুষ খাদ্য ও সুপেয় পানির অভাবে রয়েছে, ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ বিতরণও বিঘ্নিত হচ্ছে অনেক এলাকায়।

আসামের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাতে নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। আসামের কাছাকাছি বিহারের ১৬ জেলায় বজ্রপাত ও ভারী বৃষ্টিপাতে মৃত্যু হয়েছে বলে অন্তত ৩৩ জনের। এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার। এক্সপার্টরা বলছেন, ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের উষ্ণমণ্ডলীয় জলরাশির কাছাকাছি অবস্থান একটী বড় কারণ। যেকারণে জলবায়ু পরিবর্তনের এ ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর তালিকায় সামনের দিকে রয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। মুখোমুখি হতে হচ্ছে আগের চেয়ে ঘন ঘন তাপপ্রবাহের।  

ইনডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেটিরিওলজির এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়ায় ভারতীয় উপমহাদেশের কিছু অংশে ‘শুষ্ক পরিস্থিতি’র উদ্ভব হয়েছে এবং অন্য অনেক এলাকায় বৃষ্টি বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর পূর্বাভাস দিয়েছে, দেশের প্রত্যন্ত উত্তরপূর্বাঞ্চলের অনেক স্থানে বজ্রপাত ও অতিভারি বর্ষণসহ ঝড় হতে পারে, যেখানে গত দুই সপ্তাহ ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ায় বিস্তীর্ণ কৃষিজমি, গ্রাম ও শহর প্লাবিত হয়ে আছে। 

ব্রহ্মপুত্র ও অন্যান্য নদ-নদীর পানি ব্যাপক ঢলের আকারে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এবং সিলেট-সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলে অনেক বাঁধ উজানের এই ঢলের তোড়ে ভেঙে গিয়ে কৃষিজমি প্লাবিত করেছে। কর্মকর্তাদের বরাতে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ২০ লাখ মানুষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যার মধ্যে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, বেশিরভাগই নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে মারা গেছেন।
 

সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, আরও হতাহত আছে কিনা, জানতে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। বন্যার কারণে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় দ্রুত ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না অনেক এলাকায়। এদিকে বন্যায় অসহায়ত্বে লক্ষ লক্ষ মানুষ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বন্যার আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় ৬০০ বিদ্যালয়। এছাড়াও কমপক্ষে ৩ হাজার হেক্টর ধানী জমি বন্যায় তলিয়ে গেছে।

সাহস২৪.কম/এসটি/এএম/এসকে. 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত