ফরিদপুরে টেঁটায় বিদ্ধ করে রাসেল ভাইপার সাপ হত্যা

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২২, ০৩:০৫

সাহস ডেস্ক

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে এবার  টেঁটায় বিদ্ধ করে হত্যা করলো পাঁচ ফুট দৈর্ঘ্যের রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ।  ২০০২ সালের নিরীক্ষায় সাপটিকে বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত বলে ঘোষণা করে আইইউসিএন বাংলাদেশ (International Union for Conservation of Bangladesh)।

বুধবার(১৬মার্চ) সকাল ১০টার দিকে চর হরিরামপুর ইউনিয়নের আবদুল হাই খানের হাটসংলগ্ন এলাকায় শেখ মোশাররফ (৪৩) তার নিজ ধান ক্ষেতে পানি দেওয়ার সময় সাপটি দেখে চিৎকার করেন।তার চিৎকার শুনে আশপাশের কৃষকরা জড়ো হয়ে সাপটিকে দেখতে পান। পরে তারা টেঁটায় বিদ্ধ করে সাপটিকে মেরে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।
 

প্রত্যক্ষদর্শী ও গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, চর হরিরামপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চর শালিপুর পশ্চিম গ্রামের শেখ মোশারফ (৪৩) সেচ দেওয়ার জন্য আজ সকালে তাঁর ধানখেতে যান। এ সময় তিনি সাপ দেখে চিৎকার করেন। তাঁর চিৎকারে পাশে কাজ করতে থাকা অন্য কৃষকেরা এগিয়ে এসে সাপটিকে মেরে ফেলে।

চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক ইব্রাহিম আল হায়দার ছবি দেখে সাপের পরিচয় নিশ্চিত করে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, “এটি বিষধর রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ। আইইউসিএন বাংলাদেশ ২০০২ সালের নিরীক্ষায় সাপটিকে বাংলাদেশে বিলুপ্ত বলে ঘোষণা করে। পরবর্তী সময়ে ২০১২ সালে, কারও কারও মতে ২০০৯ সালে পুনরায় রাজশাহীর চরাঞ্চলে সাপটি দেখা যায়। সম্প্রতি এই সাপ পদ্মা ও মেঘনা নদীর তীরবর্তী বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রাম জেলায় দেখা গেছে। 

এই প্রজাতির সাপ নিউরোটক্সিক ও হিমোটক্সিক বিষ ধারণ করে। এ প্রজাতির সাপের দংশনের ফলে প্রাথমিক অবস্থায় স্থানটি ফুলে যায়, ধীরে ধীরে স্নায়ুতন্ত্র ও কিডনি বিকল হয়ে পড়ে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং অধিকাংশ জেলা সদর হাসপাতালে এ সাপের বিষের প্রতিষেধক পাওয়া যায়। তাই এই সাপের দংশনের শিকার রোগীকে অতি দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া গেলে মৃত্যুঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায় বলে জানান, প্রভাষক ইব্রাহিম আল হায়দার ”।

চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ২০১৬ সালের শেষের দিক থেকে চরভদ্রাসন এলাকায় চন্দ্রবোড়া সাপ দেখতে পাওয়া যায়। ২০১৮ ও ১৯ সালে এ সাপের দংশনে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত এই সাপের দংশনে ৮ থেকে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটার প্রতিষেধক থাকায় সাপের দংশনে মৃত্যুর হার কমে আসছে।

উপজেলা বন কর্মকর্তা সালাহ্ উদ্দীন বলেন, “টেঁটায় বিদ্ধ করে রাসেল ভাইপার হত্যার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। একটি প্রশিক্ষণ নিতে তিনি ঢাকায় যাচ্ছেন। ঢাকা থেকে ফিরে এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেবেন।”

এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি একই ইউনিয়নের আমিন খাঁর ডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দারা আরো একটি  রাসেল ভাইপার সাপ পিটিয়ে হত্যা করে । 

সাহস২৪.কম/এবি.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত