কুমির ‘মাদ্রাজের’ চিকিৎসা শুরু করলো বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর

প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২১, ১৮:৩০

সাহস ডেস্ক

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমানের তত্ত্বাবধায়নে  ঐতিহ্যবাহী খান জাহান আলীর (রহ.) মাজার দিঘির অসুস্থ কুমির ‘মাদ্রাজের’ চিকিৎসা শুরু করেছে বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। বুধবার (৭ জুলাই) দুপুরে দিঘির শানবাঁধানো ঘাটে এ চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়।

স্থানীয় ও গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবন পূর্ববন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবিরের পরামর্শে ও স্থানীয়দের সহায়তায় দিঘি থেকে কুমিরটিকে ওপরে ওঠানো হয়। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান এবং করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবীর কুমিরটিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন।  

সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ বলেন, কুমিরটিকে ওপরে ওঠানোর পরে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি। কুমিরটির চোয়ালে যে ক্ষত ছিল, সেটি এখন নেই। তবে কুমিরটি একটি চোখে মোটেও দেখতে পাচ্ছে না। অন্য চোখটিতেও ঝাপসা দেখছে। তাই জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে ১০ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, কুমিরটি দেখে আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এটির বয়স অন্তত ৪০ থেকে ৫০ বছর। যার ফলে এটির ওজন অনেক বেড়ে গেছে। যা ৮০০ থেকে ৯০০ কেজির মত হবে। অপ্রয়োজনীয় চর্বি কমানোর জন্য কুমিরটিকে পরিমিত খাবার দেওয়া প্রয়োজন।

বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান জানান, প্রাণিটি এখন মোটামুটি সুস্থ রয়েছে। তবে কুমিরটির চোখ বেশ ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব। প্রাণীটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। পর্যবেক্ষণের জন্য কুমিরটিকে আগামী ১০ দিন দিঘি সংলগ্ন একটি বাড়িতে রাখা হয়েছে।

খানজাহান আলীর (রহ.) মাজারের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী বলেন, মিঠা পানির কুমির খানজাহান আলীর মাজার সংলগ্ন দিঘিসহ বাগেরহাটের একটি ঐতিহ্য। বেশ কিছুদিন ধরে কুমিরটি অসুস্থ। আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয়, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। আজ কুমিরটির চিকিৎসা শুরু হয়েছে। আশা করি, কুমিরটি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় কিছু লোভী প্রকৃতির মানুষ কুমির তাদের ঘাটে রাখতে চায়। দর্শনার্থীদের কুমির দেখিয়ে অর্থ উপার্জনই তাদের উদ্দেশ্য। এর জন্য তারা কুমিরকে বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে থাকেন। বিষয়টি নজরে এনে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

এর আগে ১২ জুন কুমিরটি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কুমিরটিকে দেখতে এলেও পানিতে থাকার কারণে চিকিৎসা দিতে পারেননি। সবার চেষ্টায় ওপরে ওঠানোর পরে কুমিরের চিকিৎসা শুরু করেছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত