দেশে সরাসরি আঘাত হানছে না ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াশ’

প্রকাশ | ২৬ মে ২০২১, ১৩:৪২

অনলাইন ডেস্ক

প্রকৃতি এবারো বড় ক্ষতির হাত থেকে রেহাই দিতে চলেছে বাংলাদেশকে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াশ’ আরো উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে এসে আজ দুপুর নাগাদ উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এতে দেশের উপকূলে কেবল প্রভাব পড়ছে, যদিও এতেই সাগর বিক্ষুব্ধ।

বুধবার (২৬ মে) আবহাওয়া অফিস জানায়, ইয়াশের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস এবং ১০০ কিমি বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে থাকবে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত।

ঘূর্ণিঝড়টি উড়িষ্যা থেকে ১২০ কিলোমিটার পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বদিকে এবং দেশের বলেশ্বর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব দিকে এগিয়ে এসেছে।

ইয়াশের প্রভাবে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষণ-পশ্চিমাঞ্চলে এরইমধ্যে অনেক বাঁধ ভেঙে গেছে। লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে লবণাক্ত পানি। ভোগান্তিতে পড়েছে লাখো মানুষ।

আবহাওয়া অধিদফতরের মধ্যরাতে বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াশ’ আজ ভোর ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৫০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষ্ণি-দক্ষ্ণি পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের টানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ১৩০ কিলোমিটার যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ হয়ে রয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়ার বিশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াশ’ আরো উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে ও ঘণীভূত হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে।

ঘূর্ণীঝড় অতিক্রমের সময় খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলা এবং এসব এলাকার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি এসব অঞ্চলে ঘন্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ও পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৬ ফুটের বেশি উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।