মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা নীলগাইটি উঠে দাঁড়িয়েছে

প্রকাশ | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৪:০৫

অনলাইন ডেস্ক

চারদিকে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা স্থানে রাখা হয়েছে নীলগাইটিকে। বিজিবির সদস্যরা কখনো গমের শিষ, কচি কাঁঠালপাতা আবার কখনো বাঁধাকপি কেটে ছুড়ে দিচ্ছেন প্রাণীটিকে। আর তা কখনো বসে, আবার কখনো দাঁড়িয়ে মুখে তুলে একমনে চিবিয়ে যাচ্ছে আহত নীলগাইটি। 

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বিজিবির কান্তিভিটা সীমান্ত ক্যাম্পে গিয়ে এই দৃশ্য দেখতে পায় গণমাধ্যম কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

প্রসংগত,গত মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার শৌলা দোগাছি এলাকা গ্রামবাসী প্রাণীটিকে জবাই করে মাংস খাওয়ার পরিকল্পনা করেন। তাঁরা প্রাণীটির গলায় ছুরিও চালাতে শুরু করেন। সে সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা সেখানে গিয়ে প্রাণীটিকে উদ্ধার করেন।

বিজিবির কান্তিভিটার সীমান্ত ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আফলাতুন নিজামী বলেন, বিরল প্রজাতির প্রাণীটি গ্রামবাসীর নজরে এলে তাঁরা সেটাকে ধরতে আক্রমণ চালান। গ্রামবাসীর হাত থেকে নিজেকে রক্ষায় ছোটছুটি করতে গিয়ে নীলগাইটি দেহে আঘাত পেয়েছিল। তার ওপর ধরা পড়ার পর গ্রামবাসী প্রাণীটিকে জবাই করার চেষ্টা করছিলেন। সে সময় তাঁদের কাছ থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রাণীটিকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাণীটির চার পা গাছের সঙ্গে শিকল ও রশি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। এরপরও প্রাণীটি শিকল ছিঁড়ে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। পরে উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জনকে খবর দিলে তাঁরা কয়েকজন এসে আহত প্রাণীটির চিকিৎসা দেন। সে সময় তাঁরা নীলগাইটির শারীরিক অবস্থার পরীক্ষা করে গলার কাটা অংশে ১৭টি সেলাই করে ক্ষতস্থানগুলোতে ওষুধ লাগিয়ে দেন।

বিজিবি কর্মকর্তা আফলাতুন নিজামী আরও বলেন, উদ্ধারের পর নীলগাইটি যেমন অসুস্থ ছিল, এখন তেমন নেই। পশুচিকিৎসকের পরামর্শে প্রাণীটিকে খাবার দেওয়া হচ্ছে, যত্নও নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার নীলগাইটির শারীরিক অবস্থা যাচাইয়ের জন্য চার সদস্যের চিকিৎসক দল গঠন করা হয়। সেই দলে ছিলেন রংপুর চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা এস এম শাহাদাৎ হোসেন, বিজিবির লে. কর্নেল মোহাম্মদ আশরাফুল আলম, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নিয়ামুল শাহাদাৎ।

বিজিবি ঠাকুরগাঁও ৫০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শহীদুল ইসলাম বলেন, নীলগাইটি সুস্থ হয়ে উঠুক। সেটা কোথায় হস্তান্তর করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

তথ্যসূত্র- প্রথম আলো