লোকালয়ে অতি বিরল প্রজাতির ১৫ ফুট লম্বা অজগর

প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ১৫:৩৮

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অথবা দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের মিশ্র চিরহরিৎ বন ও গরান বনাঞ্চলের অতি বিরল প্রজাতির ১৫ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি অজগর কুমিল্লার হোমনা উপজেলার লোকালয়ে ধরা পড়েছে। অজগরটিকে বুধবার বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী নৌশাদ জানান, বাঁশঝাড়ের পাশ দিয়ে গাছের গুড়ির মতো এঁকে-বেঁকে কিছু একটি চলতে দেখে চোখ আটকে যায় একজনের, একে একে সকলের চোখ পড়ে ওটার দিকে। দ্রুত পাশের একটি খড়ের গাঁদার নিচে গিয়ে ঘাপটি মেরে যায় সাপটি। এদের একজন দৌঁড়ে বাড়ি থেকে টেঁটা নিয়ে এসে বিষধর সাপ মনে করে দ্রুতই টেঁটা দিয়ে সাপটির মাথায় বসিয়ে দেয়। টেঁটাবিদ্ধ আস্ত সাপটি টেনে বের করার পর তাদের চোখ চড়কগাছ; অজগর! ১৫ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১২ কেজি ওজনের পুরুষ অজগরটির বয়স প্রায় দুই বছর। এটি উজানের পানিতে ভেসে আসতে পারে বলে ধারণা করেছেন বন বিভাগ।

কুমিল্লার হোমনা পৌর এলাকার বাগমারা গ্রামের ২ নং ওয়ার্ড কমিশনার আবুল হোসেনের বাড়ির খড়ের গাঁদা থেকে এটিকে উদ্ধার করা হয়। অজগরটি যেখানে পাওয়া যায়, তার একটি দূরে একটি পানির জলা (খালের মতো) প্রবাহমান এবং একটি পুরনো বাঁশঝাড় রয়েছে।

পৌর কমিশনার আবুল হোসেন জানান, বিষধর সাপ মনে করে ছেলেরা অজগরটিকে টেঁটা দিয়ে আটক করে। পরে তারা এটিকে প্রশাসনকে খবর দিয়ে বন বিভাগের কাছে তুলে দেয়।

স্থানীয় যুবকদের সহায়তায় টেঁটাবিদ্ধ অজগরটি উপজেলা পশু সম্পদ কার্যালয়ে নেয়া হলে এটিকে ব্যথানাশক প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে বন বিভাগের মাধ্যমে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখানে উন্নত চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা চিড়িয়াখানায় হস্তান্তর করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপ্তি চাকমা বলেন, আমরা প্রাণিবৈচিত্র্য রক্ষা করার স্বার্থেই অজগরটিকে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থার করে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছি।

হোমনা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়ভাবেই টেঁটা খুলে রাতে অজগরটি হাসপাতালে নিয়ে আসে। অজগরটি মারাত্মকভাবে মাথায় জখম হয়েছে। আমরা প্রথমেই এটিকে ব্যথানাশক ওষুধ এবং আনুষাঙ্গিক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বন বিভাগের মাধ্যমে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিই।

অজগরটির চিকিৎসা দেয়া জেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. নাজমুল জানিয়েছেন, মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত অজগরটিকে আমাদের সাধ্যমতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। এখনও এটি বেঁচে আছে, তবে আশঙ্কামুক্ত নয়। বন বিভাগ এটিকে চিড়িয়াখানায় হস্তান্তরের মাধ্যমে আরও উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে।

উপজেলা ফরেস্টার ফজলে রাব্বী বলেন, আজগরটি জেলা সদরে নিয়ে এসে আরও চিকিৎসা দিয়েছি। এটি বর্তমানে সুস্থ হতে চলেছে। চিড়িয়াখানায় হস্তান্তর করেছি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত