বাংলাদেশে বিপন্ন প্রজাতির পাখি “ডাহুক”

প্রকাশ : ১৬ মে ২০১৯, ০১:১৯

মাঝারি আকৃতির জলের পাখি ডাহুক। ডাহুক খুব সতর্ক পাখি। আত্মগোপনে পারদর্শী। এই পাখিটি খুব ভীরু বলেই কি এত সুন্দর ? পুকুর, খাল, জলাভূমি, বিল, নদীর গোপন লুকানো জায়গা বসবাসের জন্য এদের খুব প্রিয়। কিন্তু দ্রুত নগর বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে সুন্দর এই পাখি ডাহুক।

বর্ষাকাল এদের প্রজনন ঋতু। বাসা করে পানির কাছে ঝোপঝাড়ের ভেতরে অথবা ছোট গাছের ঝোপালো ডালে। নিরাপত্তা ঠিকঠাক থাকলে মাটিতেও বাসা করে। ৫-৭টি ডিম পাড়ে এরা, ডিমের রং ফিকে হলুদ বা গোলাপি মেশানো সাদা। ডাহুক-ডাহুকী দুজন মিলেই ডিমে তা দেয়। বাচ্চাদের রং সব সময় হয় কালো। ডিম ফোটে প্রায় ২১ থেকে ২৪ দিনে। ২৪ থেকে ৩০ ঘণ্টা পরই বাচ্চারা বাসা ছাড়ে। মাস তিনেক পরে বাচ্চারা আলাদা জীবন বেছে নেয়। প্রজননের সময় একটি পুরুষ ডাহুক অন্য একটি পুরুষ ডাহুককে সহ্য করতে পারে না। দেখলেই মারামারি করে। দারুণ লড়াকু পাখি এরা।

ডাহুকের প্রিয় খাদ্য জলজ পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ। এছাড়া শাপলা-পদ্ম ফুলের নরম অংশ, কচি পানিফল, জলজ শেওলা, লতাগুল্মের নরম অংশ, ধান, কাউন, ডাল, সর্ষে, শামুক, কেঁচো, জোঁক, মাছ, ছোট মাছ, শাকসবজি, ফল খেয়ে থাকে।

পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত, প্রায় ৮৩ লক্ষ ৪০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস। আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটিকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে।

ঝোপঝাড় ধ্বংসের ফলে ডাহুকের বর্তমান অবস্থা খুব বেশি ভালো নয়। প্রকৃতিতে এদের নিরাপত্তা দিতে অবশ্যই এদের বাসস্থান ধ্বংস বন্ধ করতে হবে। না হলে সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন বিপন্নের লাল তালিকায় লেখা হবে ডাহুক পাখির নাম।

 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত