বাংলাদেশের অতি বিপন্ন সোনালি বিড়াল

প্রকাশ : ১১ মে ২০১৯, ০২:৫৫

বাংলাদেশে আট প্রজাতির বন্য বিড়ালের বাস। মাঝারী আকৃতির বন্য বিড়াল প্রজাতির মধ্যে সোনালি বিড়াল (Asian golden cat) বড়। দেহের রঙ সোনালি বাদামী থেকে লালচে বাদামী। বুক পেটের নিচের দিকটা সাদাটে। গলা ও নাকের উপর হতে কানের মাঝখানে সাদা ও কালচে রেখা আছে। নাকের দু পাশে এবং চিবুকে সাদা রেখা আছে। শরীরের তুলনায় পা আকারে খাটো। মাথা হতে দেহের মাপ – ৬৬ থেকে ১০৫ সেমি. লেজ লম্বা ৪০ থেকে ৫৭ সেমি।

সোনালি বিড়াল একসময় বাংলাদেশের চিরসবুজ বনগুলোয় অল্পবিস্তর দেখা গেলেও এখন এদের অস্তিত্ব নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের গভীর জঙ্গলে আর সিলেটের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বনগুলোতে এখনো এদের থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

সোনালি বিড়াল অন্য সব বন্য বিড়ালের-মত নিশাচর। রাতের বেলায় ঘোরাফেরা ও শিকার করে।  ছোট হরিণ, ছাগল এমনকি গরুর বাচ্চাও শিকার করে খায়।  নিজ এলাকা গন্ধযুক্ত তরল ছিটিয়ে বা গাছে নখের আঁচড়ের দাগদিয়ে চিহ্নিত করে। বন্দীদশায় সোনালি বিড়াল ১২ বছর পর্যন্ত বাঁচার প্রমাণ আছে।

এই বন্য বিড়ালের (Asian Golden Cat) শরীর না বাঘের মতো বড় না বিড়ালের মতো ছোট। মধ্যম আকারের। গায়ের রঙ লালচে, আবার অনেকটা সোনালি বাদামি; ধূসর ও কালো রঙেরও হয়। বৈজ্ঞানিক নাম Catopuma temminckii. গড় আয়ু ২০ বছর। পাহাড়ি বনাঞ্চলে এদের বসবাস। দক্ষিণ এশিয়া এদের অভয়ারণ্য, হিমালয় অঞ্চলেও এদের দেখা মিলে। এদেও পশম প্লেইন। ডাচ পশুবিদ কোয়েনরাড জ্যাকব ট্যামিক (Coenraad Jacob Temminck) প্রথম এই বন্য বিড়াল নিয়ে গবেষণা করেন বলে এই বিড়াল ‘ট্যামিকের সোনালি বিড়াল’ নামেও পরিচিত। এরা ধূর্ত শিকারী, দৌড়ে চ্যাম্পিয়ান এবং এক লাফে অনেক উঁচুতে উঠতে পারে।

সোনালি বিড়াল বাংলাদেশের পাহাড়ীবনে (চট্টগ্রাম) বাস করে। কিন্তু দিনে দিনে বন ও প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ফলে বাংলাদেশে এই প্রাণীটি আজ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। অনেকের ধারনা সোনালি বিড়াল বিলুপ্তির শেষ প্রান্তে। অতি বিপন্ন সোনালি বিড়ালের প্রধান হুমকি বাসস্থান ধ্বংস সেই সাথে সোনালি সুন্দর চামড়ার লোভে চোরা শিকার।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত