রিভিউ: WAR (2019)

প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০১৯, ১২:৪৮

অর্পন অপু

১৯০৬ সালে নির্মিত অস্ট্রেলিয়ান মুভি 'The Story of the Kelly Gang' কে বলা হয় পৃথিবীর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ফিচার ফিল্ম। উপমহাদেশের হিসেবে সেটা ১৯১৩ সালের 'রাজা হরিশচন্দ্র'। এত কথা বলার কারন হচ্ছে, গত ১০০ বছরে বিভিন্ন দেশের কাহিনীকার, পরিচালকগন সম্ভাব্য প্রায় সকল গল্পের পারমুটেসন-কম্বিনেসন হয়ত আবিস্কার করে ফেলেছেন। ফলে যারা একটু মুভি বাফ তারা কোন মুভি দেখতে বসলেই মনে হয়, "আরে... এই জিনিস তো ওখানে দেখছি... এ আর নতুন কি... এই কনসেপ্টে আর কত?" মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। সত্যি বলতে সেই 'ওয়াও' ফ্যাক্টর এখন আর যেখানে সেখানে পাওয়া যায় না, কালেভদ্রে মেলে। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে নতুন কিছু আসলেও একশন-থ্রিলার জনরাটা বড় একঘেয়ে।

হাস্যকর লাগতে পারে একটা একশন-থ্রিলার জনরার হিন্দি মুভি নিয়ে এত বড় ইন্ট্রো! দিচ্ছি কারন যখন কেউ ভাল কিছু করার চেষ্টাটা করে তাকে তার কাজে সাদুবাদ অন্তত দেয়া উচিত। যেটা 'War' মুভির পরিচালক সিদ্ধার্থ আনন্দ -এর প্রাপ্য। মুভিটি মেকিং-এ যত্নের ছাপ স্পষ্ট। তাঁর বেশ কয়েকটি মুভি দেখার সুবাদে নির্দ্বিধায় বলা যায় আগের মুভির ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে মোটামুটি পারফেক্ট এবং গ্রিপিং একটা মুভি তিনি বানাতে পেরেছেন। একশন-থ্রিলার জনরার হিন্দি মুভিতে যে লেভেল তিনি সেট করলেন সেটা সহসাই কেউ ভাঙ্গতে পারবে না।

একটা সময় হিন্দি মুভিতে প্রেম-মহব্বত বা হাত ধরা-ধরি করে দুটো গান না রাখার সাহস কেউ দেখাতে পারেনি। এই সময়ে এসে অন্তত কোন কোন পরিচালক সেই ধারনা থেকে কিছুটা বের হয়ে আসতে পেরেছেন। ফলে এই মুভিতে দুটো অপ্রয়োজনীয় গান থাকলেও তা সহ্য করে নেয়া যায়। কিন্তু সেই ভারতীয় দর্শকের চাহিদা মেটাতে শেষে এসে টাইগারের এইট-প্যাক বডি দেখাতে গিয়েই মুভিটি সবচেয়ে বড় ব্ল্যান্ডার করেছে এবং বড় একটা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে যার কোন প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু এটা বাদ দিয়েও 'War'-কে এখন পর্যন্ত সেরা হিন্দি একশন-থ্রিলার বলা যায়।

এধরনের মুভিতে অভিনয় দক্ষতার থেকে বড় হয়ে দাঁড়ায় প্রতি সিকোয়েন্সে সাবলিল উপস্থিতি, যেটা প্রত্যেক অর্টিস্ট করতে পেরেছেন। তবে অভিনয়ের যেটুকু সুযোগ ছিল, টাইগার শ্রফ সেটুকু সারপ্রাইজিংলি বেশ ভালভাবে করতে পেরেছে। মেয়েলি চেহারার ট্যাগ নিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা টাইগারের সবদিক থেকে উন্নতি চোখে পড়ার মত কিন্তু এখনো সে ডিরেক্টরস আর্টিস্ট, ভাল ডিরেক্টরের হাতে পড়লে সে ভাল করবে নয়ত নয়। হৃত্বিক-কে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই, দুঃখজনক হচ্ছে, তাঁর সামর্থের সদব্যবহার তেমন কেউ করে পারছেন না।

এই সময়ে একটা মুভির সাফল্য-ব্যর্থতা নির্ধারিত হয় মুভিটি কত আয় করল তার উপর। সন্দেহাতীত ভাবে হৃত্বিক বা টাইগার কেউই সালমান খানের মত ক্রাউড পুলার না বা তাদের ফ্যান-বেসও অত স্ট্রং না। ফলে সালমান খানের 'টাইগার জিন্দা হ্যায়'-এর মত মানের মুভি হেসে-খেলে ৩০০ কোটির ঘরে চলে গেলেও সবদিক থেকে ভাল হওয়া সত্ত্বেও 'War'-এর ৩০০ কোটির ঘরে যাওয়া অনেক যদি-কিন্তুর উপর নির্ভর করছে। কিন্তু ভিউয়ারশিপ কাউন্ট করলে 'War' মুভির রিপিট ভ্যালু অনেক বেশি হবে। ৭/১০।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত