‘আমরা একটা রেভ্যুলেশনের জন্য অপেক্ষা করছি’
প্রকাশ | ২২ জুন ২০১৬, ২০:০১ | আপডেট: ২২ জুন ২০১৬, ২০:৩৭
নতুন প্রজন্মের আলোচিত অভিনেতা এলেন শুভ্র। নিজের সাবলিল অভিনয় প্রতিভা দিয়ে নজর কেড়েছে দর্শকদের। সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয় আর মিডিয়াবাজী নিয়ে এবার সাহসের মুখোমুখি এ্যালেন শুভ্র।
সাহস: এবারের ঈদে আপনার কাজের কি অবস্থা?
এ্যালেন শুভ্র: আমার এবার ঈদে ব্যস্ততা খুবই কম।
সাহস: সবাইতো খুব ব্যস্ত আপনার কাজ কম কেন?
এ্যালেন শুভ্র: আমি বরাবরের মতই একটু কম কাজ করি কিন্তু বেছে কাজ করি, এই আর কি।
সাহস: তবে ঈদে কাজ কোনটা কোনটা করা হলো?
এ্যালেন শুভ্র: ঈদে ইমরাউল রাফাতের একটি কাজ আর ইশতিয়াক আহমেদ রুমেল ভাই এর একটি কাজ, এই-ই।
সাহস: মিডিয়ায় আপনার শুরু কিভাবে?
এ্যালেন শুভ্র: মিডিয়ায় আমার বিগেনিং একটি ধারাবাহিক নাটকে। ‘ওখানে রঞ্জু’ নামের একটি ক্যারেক্টার আমি করেছি এবং ঐখান থেকেই আমার শুরু হয়।
সাহস: কাজের অনেক মাধ্যম থাকতে অভিনয়টাকে কেন মনে হলো আপনার জন্য পার্ফেক্ট! যেহেতু আরো দশজন এখানে স্ট্রাগল করছে, তবে আপনার কেন মনে হলো ঐ দশজনের থেকে আপনি আলাদা?
এ্যালেন শুভ্র: আমি থিয়েটার করতাম এবং আমার কখনো ইচ্ছে ছিল না যে আমি টিভিতে কাজ করবো বা করতে পারবো। বাট লাকিলি (সৌভাগ্যবশতঃ) আমি একটা অডিশন দেই রঞ্জু ক্যারেক্টারটার জন্য এবং ঐ ক্যারেক্টারটা আমি যেভাবে প্লে করেছিলাম এরপর থেকে আসলে আমার এরকম ফিডব্যাক আসা শুরু হলো যেটা ক্যামেরার পিছনের মানুষদের কাছে থেকে, ক্যামেরার সামনের মানুষদের কাছে থেকে এবং পরিবারের কাছের মানুষদের কাছে থেকে। যার ফলে আমি অনেক ইন্সপিরেশন পাই এবং যেহেতু আগে থেকে থিয়েটার করতাম….
সাহস: থিয়েটার কোনটা?
এ্যালেন শুভ্র: প্রাচ্যনাট্য। তো অভিনয়ের প্রতি একটা ভালবাসা ছিলই আর ভালবাসার জায়গায় কাজ করতে কে না চায়! সো দিস ইজ নট এ রঙ জব ফর মি।
সাহস: আগে আমরা যেভাবে দেখতাম অভিনেত্রী অভিনেতাদের দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকা, এখনকার নতুনদের মধ্যে কেন এই ব্যাপারটা নেই, আসছে আবার হঠাৎ করে চলে যাচ্ছেন। এর পিছনের কারন কি?
এ্যালেন শুভ্র: আমিও নতুনদের মধ্যেই একজন, আমি নিজেকে কখনো পুরাতন ভাবি না। আর মিডিয়াতে টেকা না টেকার বিষয়টা আসলে একেক ব্যক্তির উপর নির্ভর করে, অভিনয় যারা করেন আমাদের দেশে তারা কেবল অভিনয় করেই বেঁচে থাকে, যেমন আমি। আমার প্রফেশনালি সব কিছুই আমি অভিনয় করে টাকা উপার্জন করে আমি ঢাকা শহরে বেঁচে থাকি। অভিনয় করার সাথে আরো অনেক কিছু জড়িত আমাদের অভিনেতাদের। টেকা না টেকার প্রশ্ন মানুষের জীবনে আসতেই পারে বিভিন্ন সময়, সমস্যায় যদি কেউ হোচট খেয়ে পরে যায় সে পিছিয়ে যায়।
সাহস: শুধু কি এইটাই কারন! নাকি অভিনয়টাকে ভালো না বাসার কারণে শুধু মাত্র দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়ার নেশায় অভিনয় জগতেই এসেই তারা স্থায়ী হতে পারছে না?
এ্যালেন শুভ্র: আমি কারো পক্ষপাতিত্ব করবো না। আমার কথা হচ্ছে যার যোগ্যতা আছে সে টিকবে। এবং সময় যেতে দিন, সময় তো এখনো শেষ হয়ে যায়নি।
সাহস: না না আমি আপনাদের ব্যাজ টার কথা বলছি না আপনাদের আগেই যেই দুই তিন বা আরো অনেক ব্যাচ এসে গেছে আমি সবার কথাই বলছি। তরুণ অভিনেতাদের ভিতর সজল অপূর্বর পর আর কাউকে তেমন ভাবে স্থায়ী অবস্থানে দেখা যায়নি।
এ্যালেন শুভ্র: সজল ভাই, অপূর্ব ভাই ওনারা নায়ক!.......
সাহস: প্রডিউসার হওয়া জন্য কি শুধু টাকা থাকা জরুরি বলে আপনি মনে করেন, না এর পাশাপাশি অন্য কোনো যোগ্যতা থাকাও জরুরি?
এ্যালেন শুভ্র: বেঁচে থাকাটা সব প্রফেশন এর জন্যই জরুরি।
সাহস: কোন কোন কোয়ালিটি থাকা দরকার একজন প্রডিউসারের?
এ্যালেন শুভ্র: আমি আসলে এই বিষয়ে খুব একটা জানি না, প্রডিউসার প্রডিউসার এর জায়গায়।
সাহস: আমাদের দর্শক হারাচ্ছি কেন? কারণটা কি বলে মনে করেন আপনি? একজন দর্শক হিসেবে বাংলা নাটকে কি পান না আপনি ?
এ্যালেন শুভ্র: লোকজন কে টিভি, বীনা পয়সায় এইচডি টিভি বাসায় বাসায় দিয়ে আসলে লোকজন নাটক দেখবে। কম দামে টিভি, আমাদের আরকি বিদেশি টিভি নাই বলে মানুষ আমাদের নাটক দেখে না।
সাহস: কিন্তু একসময় আমাদের দেশের দর্শকরা তো ১৪ ইঞ্চি টিভির সামনে বসে দেশীয় নাটক মুগ্ধ হয়ে দেখতো।
এ্যালেন শুভ্র: ঐ যে ঐ টিভিগুলো দিলে তখন মানুষ বাংলা সিনেমা দেখবে বাংলা নাটক দেখবে।
সাহস: নিজেকে নিয়ে ফিউচার প্ল্যান কি? ভবিষ্যতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
এ্যালেন শুভ্র: আমি আমাকে ভাল মানুষ হিসেবেই দেখতে চাই সব সময়, খারাপ যেন না হয়ে যাই, এই আর কি!
সাহস: বাংলা নাটকে আমরা যে সব সময় বলি ইতিবাচক পরিবর্তন দরকার ইতিবাচক পরিবর্তন দরকার, আপনি কি মনে করেন, পরিবর্তন আসলে কতটুকু হচ্ছে?
এ্যালেন শুভ্র: পরিবর্তন তো আসলে একটা রেভ্যুলেশন, আর রেভ্যুলেশন এর জন্য অপেক্ষা করতে হয়। তো আমরা অপেক্ষা করছি।
সাহস: চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবনা কি?
এ্যালেন শুভ্র: চলচ্চিত্র নিয়ে অনেক বড় বড় ভাবনা, বড় বড় স্বপ্ন। স্বপ্ন একদিন পূরণ হবে সেই আশা করি।
সাহস: বাংলা নাটককে কোথায় দেখতে চান?
এ্যালেন শুভ্র: বাংলা নাটকের মেকাররা সিনেমা বানাবে এটাই চাই, এবং তারা বানাচ্ছেন এবং তারাই হয়তো পরিবর্তন আনবেন অথবা পরিবর্তন হয়তো হতে শুরু করেছে কিন্তু আমরা টের পাচ্ছি না।
সাহস: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
এ্যালেন শুভ্র: সাহসকেও ধন্যবাদ।