কুবিতে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা, ভোট গ্রহণ স্থগিত

প্রকাশ | ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:১৮

অনলাইন ডেস্ক

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির ‘বিতর্কিত’ নির্বাচন ঘিরে নীল দলের দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষকদের বৃহৎ একটি অংশ দাবি করছে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই এই নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে এই নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে শিক্ষকদের দুই গ্রুপ এখানে মুখোমুখি অবস্থান করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রক্টোরিয়াল বডি আসলে সহকারী প্রক্টর কাজী এম আনিছুল ইসলামের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো: শামীমুল ইসলাম এবং গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমান মাহবুব।

এসময় অনেক শিক্ষককে বলতে শুনা যায়, আজকে কোথায় নির্বাচন হবে তা তাদের জানানো হয়নি। শিক্ষকদের একটি গ্রুপ মিলে নিজেরা নিজেদের মতো এই নির্বাচনের আয়োজন করছে।

কাজী এম আনিছুল ইসলাম বলেন, আমি যখন দেখলাম এখানে হট্টগোল হচ্ছে তখন আমার দায়িত্ব থেকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হিসেবে পরিস্থিতি দেখতে আসি এবং খুব বিনয়ের সাথে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা দুইজন শিক্ষককে বলি আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা আমাকে ঢুকতে না দিয়ে উল্টো আমার সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে বলতে চাই আমি প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালনে বাধাগ্রস্ত হয়েছি।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো: শামীমুল ইসলাম বলেন, উনি এসে আমাকে বলছিলেন রুমের ভেতরে যাবেন তখন রুমে ভেতরে অনেক লোক ছিল। তাই আমি উনাকে বাহিরে দাঁড়াতে বলেছি।

একজন সহকারী প্রক্টরকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষকদের নির্বাচনে প্রক্টরের কোনো দায়িত্ব আছে বলে মনে হয় না। আমি উনার কর্মপরিধি সম্পর্কে জানি। আমার মনে হয় না আমি ভুল কিছু করেছি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. জি. এম. মনিরুজ্জামান এই বিষয়ে বলেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে শিক্ষক সমিতির বর্তমান কার্যনির্বাহী পরিষদ। তারিখ ঘোষণার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার ছিলো না। এখন যদি নির্বাচনের পরিবেশ না থাকে তাহলে নির্বাচনের আয়োজন করা সম্ভব না।

পরিস্থিতি অনুকূল না থাকায় ও শিক্ষকদের দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে এবং ভোট গ্রহণের সময় পার হয়ে যাওয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. জি. এম. মনিরুজ্জামান নির্বাচন কক্ষের সামনে এসে নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দেন।

নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে তিনি বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্র ও নিয়ম অনুযায়ী গঠিত নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণের জন্য সকল আয়োজন সম্পন্ন করে প্রস্তুত ছিলো। উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দের দুই পক্ষের দুই আবেদনের ভিত্তিতে এবং তফসিলে উল্লিখিত ভোটগ্রহণের সময় দুপুর ১টা পার হয়ে যাওয়ায় আজকের ভোটগ্রহণ নির্বাচন কমিশন কতৃক স্থগিত ঘোষণা করা হলো।

উল্লেখ্য, এর আগে শিক্ষকদের কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে ১০৬ জন শিক্ষক স্বাক্ষরিত একটি অনাস্থা পত্র দেওয়া হলেও তা আমলে না নিয়েই নির্বাচনের আয়োজন করে শিক্ষকদের একটি অংশ।

সাহস২৪.কম/এএম.