রাবিতে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার ৯টি বাস

প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:৫১

রাবি প্রতিনিধি

অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হতে বসেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রায় কোটি টাকার ৯টি বাস। একসময় যে বাসে চড়তো অর্ধশত শিক্ষার্থী সেই বাসে এখন বসবাস করছে উইপোকা আর বিচ্ছু। মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে বাসগুলোর ইঞ্জিন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের পিছনে ৩টি ও পরিবহন স্ট্যান্ডে ৬টিসহ মোট ৯টি বাস দীর্ঘদিন ধরে অকার্যকর অবস্থায় পড়ে আছে।

যদিও শিক্ষার্থীদের পরিবহনের সম্পূর্ণ জোগান এখনো দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তবুও দীর্ঘ দিন ধরে অচলাবস্থায় পড়ে থাকা এসব বাসগুলোর মেরামতের দিকে কোনো সুনজর নেই প্রশাসনের। বৃষ্টিতে ভিজে রোদে শুকিয়ে জং ধরে প্রায় অচলবস্থা। এতে বাস সংকটে যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে শিক্ষার্থীরা আবার অন্যদিকে এসব পরিবহনের ইঞ্জিনসহ অনেক যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ। তবে এ সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য মোট ৩০টি বাসের মধ্যে সচল রয়েছে ২৮টি বাস। এই ৩০টি বাসের জন্য চালক রয়েছে মাত্র ২২ জন। তবে এই সংখ্যাকে বাসের তুলনায় খুবই অপ্রতুল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, ৩০ টি বাসের বিপরীতে কমপক্ষে ৬০ জন চালক প্রয়োজন। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধকেরও কম চালক নিয়ে চলতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনগুলোকে। এসব পরিবহন নগরীর ১৮টি রুটে চলাচল করছে। কিন্তু চালক সংকটের কারণে একই সাথে সবগুলো রুটে পর্যাপ্ত বাস দিতে পারছে না পরিবহন দপ্তর।

এদিকে সচল বাসগুলো ছাড়াও ৯টি বাস সম্পূর্ণ পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে পরিবহন স্ট্যান্ডে। বাসগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকার্যকর হয়ে আছে। যেগুলোর প্রতিটির ক্রয়মূল্য পড়েছিল প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। সেই হিসেবে প্রায় কোটি টাকার সম্পদ অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে। মেরামত কিংবা বিক্রি করার কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেই প্রশাসনের। ফলে এসব বাসের ইঞ্জিনসহ অনেক যন্ত্রাংশ অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব সম্পদ নষ্ট হওয়ার পিছনে প্রশাসনের অবহেলা ও গাফলতিকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, পুরাতন বাসগুলোকে এভাবে অবহেলায় নষ্ট করা প্রশাসনের মোটেও ঠিক হচ্ছে না। ৯টি পুরাতন বাস এভাবে রোদে বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়ার চেয়ে এগুলোকে বিক্রি করে দিলে বিশ্ববিদ্যালয় মোটা অংকের টাকা পেতো। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যার তুলনায় বাসের সংখ্যা অপ্রতুল। বাস সংকট কাটিয়ে উঠতে পুরাতন বাসগুলো বিক্রির টাকায় নতুন বাস ক্রয় করতে অনেকটা সহায়ক হবে বলে মনে করছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক ড. মোকছিদুল হক দৈনিক সাহসকে বলেন, পরিবহন দপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটে রয়েছে। বর্তমানে যে বাসগুলো চালু রয়েছে সেগুলোর জন্যই পর্যাপ্ত চালক নেই। মূলত জনবল সংকটের কারণেই অকার্যকর বাসগুলো মেরামত কিংবা কার্যকর করার চিন্তা করছি না। তবে আমি ইতোমধ্যে কয়েকটি কোম্পানির সাথে এসব বাসগুলো বিক্রয়ের ব্যাপারে কথা বলেছি। সম্ভব হলে বাসগুলো বিক্রি করে নতুন বাস ক্রয়ের চেষ্টা করবো।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হয়। এখানে বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যার ফলে তড়িঘড়ি করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সাথে এমওইউ করতে হয় বলে জানান এই প্রশাসক।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত