চা শ্রমিকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রাবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২২, ১৪:২৮

সাহস ডেস্ক

চা পাতা তোলার ভর মৌসুমে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২৭ আগস্ট) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে জালালাবাদ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এর ব্যানারে এই অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান সম্বলিত পোস্টার প্রদর্শন করেন। ‘বৈষম্য নিপাত যাক ৩০০ টাকা মজুরি পাক’, ‘চা শ্রমিকদের পেটে যদি না থাকে ভাত, দেশের অর্থনীতি হবে কুপোকাত’, ‘চা শ্রমিকদের ৭ দফা দাবি মানতে হবে’, ‘রুটি রুজির দাবি, মানতে হবে মানতে হবে’, ‘বাঁচাতে হলে দেশের অর্থনীতি বাড়াতে হবে চা শ্রমিকদের মজুরি’ এমনসব পোস্টার লিখনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিবাদ জানান।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সিলেটি শিক্ষার্থীদের সংগঠন জালালাবাদ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি মহিবুল হাসান রনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে একটি পরিবার তো দূরের কথা একজন ব্যক্তিরও খাদ্য ও বস্ত্রের চাহিদা পূরণ হয় না। সেখানে বাকি মৌলিক অধিকারগুলো পূরণের আশা তো চা শ্রমিকদের জন্য দুঃস্বপ্ন। অথচ ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চা বাগানের মালিকপক্ষের সঙ্গে ১২ দফায় বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোনো সুফল আসেনি। বাধ্য হয়ে ১১ দিন ধরে আন্দোলন করছেন চা শ্রমিকেরা।

কর্মসূচিতে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও সংগঠনটি কোষাধ্যক্ষ এম. কামিল আহমেদের সঞ্চালনায় লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ইউসুফ শরিফ বলেন, আমরা জানি চা বাগানের চা শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরে মজুরিসহ বিভিন্ন বৈষম্যের শিকার। দিনপ্রতি ন্যূনতম মজুরি ১২০ টাকায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে ১২০ টাকায় একজন মানুষের দিন চলতে পারে না। চা শ্রমিকদের জীবন নিয়ে মালিক পক্ষের কোনো চিন্তা নেই। আমি চা বাগানের মালিকদের কাছে দাবি জানাবো, চা শ্রমিকদের দেশের নাগরিক হিসেবে ভাই-বোন মনে করে তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে শ্রমিক ভাইদের ঘরে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক।

চা শ্রমিকদের সাথে বৈষম্য নয় রীতিমত অত্যাচার চলছে দাবি করে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত রহমান বলেন, চা শ্রমিকেরা যে ৩০০ টাকা মজুরি দাবি জানিয়েছে এটাও বর্তমান সময়ের সাথে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ১২০ টাকা তো নয়ই ৩০০ টাকা দিয়েও একটি পরিবার চালানো সম্ভব না। তবুও চা-বাগানের মালিকপক্ষ তাদের দাবি মেনে নিচ্ছে না। আজকে আমরা বলি বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই। কিন্তু চা শ্রমিকদের সাথে যা হচ্ছে তা বৈষম্য নয়, রীতিমত তাদের সাথে অন্যায় অত্যাচার চলছে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। এই বৈষম্য দূর করতেই হবে।

এসময় শিক্ষার্থীরা মালিকপক্ষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তাদের দাবি বেশি না মাত্র ৩০০ টাকা মজুরি চায়। যারা চা বাগানের মালিক তাদের পরিবারের খবর নিয়ে দেখবেন একেকজন শত কোটি টাকার মালিক। এই শত কোটি টাকা এসেছে এই চা বাগানের শ্রমিকদের রক্তকে ঘামে পরিণত করে কঠোর পরিশ্রম করায়। তারা বেশি টাকা চায়নি, তাদের দাবি মেনে নিন।

ওসময় বর্তমান সময়ের জীবনযাপনের উপযোগী ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ এবং স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও চা মালিকেদের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত