রাবিতে শিক্ষককে হেনস্তা, ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার

প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২২, ১৮:২২

সাহস ডেস্ক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের এক শিক্ষককে হেনস্তা করার অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. আশিক উল্লাহ। তিনি আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে মতিহার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। আশিক উল্লাহকে ওই ঘটনার পর থেকে প্রক্টরের দপ্তরে রাখা হয়েছে।

প্রক্টর আসাবুল হক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আশিক উল্লাহ দীর্ঘদিন যাবৎ একাধিকবার শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশের বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে সে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হত্যার হুমকি দিয়েছে। আজ (বুধবার) আইন বিভাগের ক্লাসরুমে শিক্ষিকা বেগম আসমা সিদ্দীকাকে হেনস্তা করার প্রেক্ষিতে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন ও দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে, তাকে রাবি থেকে শৃঙ্খলা কমিটি ও সিন্ডিকেটে রিপোর্ট সাপেক্ষে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

এ ব্যাপারে প্রক্টর আসাবুল হক জানান, ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এর আগেও বেশকিছু অভিযোগ এসেছে। সব অভিযোগের ভিত্তিতে ও উপাচার্যের নির্দেশনায় ওই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থী আশিক উল্লাহর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হচ্ছে জানিয়ে প্রক্টর আরও বলেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন শৃঙ্খলা কমিটিতে গেলে, সে অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার সকালে অধ্যাপক বেগম আসমা সিদ্দিকা একটি বর্ষের ক্লাস নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাকে বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে হেনস্তা করেন আশিক উল্লাহ। এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত বিভাগের অন্য শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে তার বহিষ্কারের দাবিতে বিভাগের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।

ঘটনার বিষয়ে অধ্যাপক বেগম আসমা সিদ্দীকা বলেন, চতুর্থ বর্ষের ক্লাস শেষ করে তিনি বের হতে গেলে আশিক উল্লাহ পথ অবরোধ করেন। বিভাগের অভ্যন্তরীণ একটি বিষয় নিয়ে তার কাছে সমাধান চান আশিক। তিনি তাকে বিভাগের সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে বলেন। কিন্তু তা না শুনেই তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনার পরই আশিক উল্লাহর বহিষ্কারের দাবিতে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা বিভাগের সামনে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণ পর তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে যান। সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এরপর বিভাগের শিক্ষকেরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন। আন্দোলন চলাকালে বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর একটি অভিযোগ করেন। এতে তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আশিক উল্লাহর ছাত্রত্ব বাতিল ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কারের খবর জানানো হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন স্থগিত করেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাধন মুখার্জি বলেন, এর আগেও আশিক শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর স্যারের বাসায় গিয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। তবে এ ঘটনায় শিক্ষার্থী আশিক উল্লাহর বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

সাহস২৪.কম/এআর/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত