অনশন ভাঙলেন শাবির শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৩৬

সাহস ডেস্ক

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙেছেন। অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের অনুরোধে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসুস্থরা হাসপাতাল থেকে অনশনস্থলে আসেন এবং ১০টা ২০ মিনিটে পানি পান করিয়ে তাদের অনশন ভাঙান। এর মধ্যে দিয়ে টানা সাতদিন ধরে চলা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক কর্মসূচি শেষ হলো। তবে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র ইয়াসির সরকার বলেন, আমরা অনশন কর্মসূচি থেকে সরে এলেও উপাচার্য পদত্যাগের আন্দোলন চালিয়ে যাব। এই উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।

এর আগে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের কাছে অনশন ভাঙার আশ্বাস দেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর চারটায় ড. জাফর ইকবাল সস্ত্রীক উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললে শিক্ষার্থীরা এ আশ্বাস দেন।

ক্যাম্পাসে এসে তারা শিক্ষার্থীদের বলেন, আজ উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আমার বাসায় আলোচনা হয়েছে। তারা বাসায় এসেছিল। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তোমরা যা চাইছো, যে দাবি তোমাদের, সেটা পূরণ হবে। তোমাদের ওসিলায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক হবে।

তিনি দুই ঘণ্টার বেশি সময় অনশনস্থলে বসে শিক্ষার্থীদের সব কথা শুনেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা গত ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া পুলিশের হামলার ঘটনা বর্ণনা করেন।

ড. জাফর ইকবাল বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর এমন হামলার ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়। এখানে শিক্ষার্থীরা সবাই বাইরে থেকে শীতে কষ্ট করছে। শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ কিন্তু তাদের জন্য কোনো মেডিকেল টিম নেই। যারা তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করতো তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যা খুবই নিন্দনীয় একটি কাজ।

শিক্ষার্থীদের সব অভিযোগ ও দাবি শোনার পর ড. জাফর ইকবাল বলেন, ‘তোমরা আমাকে গণমাধ্যমের সামনে কথা দিয়েছ, এই অনশন ভাঙবে। তোমাদের জীবন অনেক মূল্যবান। একজন মানুষের জন্য তোমরা জীবন দিয়ে দিবা এটা মানা যায় না। সাবেক ৫ শিক্ষার্থীর বিষয়ে কথা হয়েছে। যেহেতু মামলা করা হয়ে গেছে, আদালতে তোলা হবে। তারা কথা দিয়েছেন ছাত্রদের জামিন দেওয়া হবে।’

এ সময় তিনি আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় সাবেক শিক্ষার্থী গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। তিনি বলেন, ‘তোমাদেরকে সাহায্য করতে যদি অ্যারেস্ট হতে হয় তাহলে আমি হব। আমি তোমাদেরকে এই ১০ হাজার টাকা দিলাম। এ টাকা দিয়ে তোমাদের তেমন কিছু হবে না জানি। কিন্তু আমি দেখতে চাই সিআইডি আমাকে অ্যারেস্ট করে কি না।’

প্রসঙ্গত, গত ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত