‘চা-চপ-সিঙ্গাড়া’ নিয়ে ব্যঙ্গ করলে ব্যবস্থা

প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২১, ০২:১৫

সাহস ডেস্ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও উপাচার্যকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যঙ্গ করলে আইনি পদক্ষেপ নেবে কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য বোঝাতে উপাচার্য চা চপের কম দাম বলে যে হাস্যরস করেছিলেন, সেটি সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না করলেও সেদিনের বক্তব্যর প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা হেয় প্রতিপন্ন না হয় সে জন্য আলোচ্য বিষয়টির স্পষ্টীকরণ প্রয়োজন হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গঠনমূলক সমালোচনা সহ্য করার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শ্রদ্ধাশীল। একইসঙ্গে, কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সমালোচনার রীতিনীতি ও মূল্যবোধ উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মানহানি ঘটায় তাহলে দেশের আইন যে তার প্রতিকার দেয় সে বিষয়েও কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল।

বিভ্রান্তিকর ও খণ্ডিত তথ্য ব্যবহার করে কোনো বিশেষ মহল যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করতে এবং মানহানি না ঘটাতে পারে সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা দেননি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আইনি পদক্ষপ নেয়া হবে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন এসেছে এবং এটা ভুল, সেটা উল্লেখ করেছেন তিনি।

উপাচার্য বলেন, আমার মনে হয় না আজকের বিজ্ঞপ্তিতে 'সমালোচনা করলে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে' এরকম কিছু বুঝানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে এ রকম কিছু উল্লেখ থাকারও কথা না। এখন যারা এভাবে শিরোনাম করছে এটি তাদের মূল্যবোধ এবং নৈতিকতার বিষয়। আমাদের কাজ তথ্যগুলোর স্পষ্টকরণ। আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেটি করেছি।

বিজ্ঞপ্তিতে ‘চা-চপ-সিঙ্গাড়া’ প্রসঙ্গ:

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে টিএসসিতে নবীন শিক্ষার্থীদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপাচার্য মহোদয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরেন। তিনি ক্যাম্পাসের মানবিক, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক গৌরবময় অধ্যায়ের কথাও বলেন। আর্থিক সঙ্গতি, পারিবারিক পেশা, জাতি, ধর্ম-সংস্কৃতি ও জন্মস্থান নির্বিশেষে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমতাভিত্তিক অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গির কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সহজ, সরল, সাধারণ ও সাবলীল জীবনাচারের গুরুত্বের কথাও উপাচার্য বলেন। অনুষ্ঠানস্থল টিএসসির গৌরবময় ভূমিকাও প্রসঙ্গক্রমে চলে আসে। তিনি নবাগত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাস্যরসে ক্যাফেটেরিয়ার সাধারণ, স্বল্পমূল্যের খাবার মেন্যু ও সবার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধার অবারিত সেবাকার্যক্রমের কথাগুলোও বলেন। বস্তুত সর্বজনীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমতাভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, মানবিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ঐতিহ্য হিসেবে উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের নিজেদের জীবনে এসবের প্রতিফলনের পরামর্শ দেন।

বিজ্ঞপ্তিতে সেই বক্তব্য সামনে আসার প্রসঙ্গ তুলে বলা হয়,পরে জানা গেল, একটি টেলিভিশনের ক্যামেরাবিহীন এক সাংবাদিক অনাহূতভাবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে উপাচার্যের বক্তব্যের মূল অংশ কাটছাট করে এবং ক্ষেত্র বিশেষে বাক্য ও শব্দ অবলোপন করে ক্যাফেটেরিয়ার বিভিন্ন খাবার আইটেমের মূল্যমান সংক্রান্ত বক্তব্যের অংশবিশেষ নিয়ে ১৫-২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল করে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত