জাবি শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলা, আহত ৪০

প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০১:৪১

সাহস ডেস্ক
প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী আহত হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে মাত্র দু’জন চিকিৎসকই চিকিৎসা দিচ্ছেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংলগ্ন গেরুয়া এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ঘটনার দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের উপস্থিতি নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হারুন অর রশীদ নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ করে বলেন, এখানে তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে উত্তেজনা চলছে। অথচ পুলিশের গুটিকয়েক সদস্য রয়েছেন। তারা কোনোভাবেই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছেন না।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে মাত্র দু’জন চিকিৎসক থাকায় ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, স্থানীয়রা হামলা করতে শুরু করেছেন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে। এরপর কয়েক দফা সংঘর্ষে প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী আহত হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে মাত্র দু’জন চিকিৎসকই চিকিৎসা দিচ্ছেন। ফলে আহত শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও পাচ্ছেন না।

এতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অভিষেক মন্ডল, কার্যনির্বাহী সদস্য এলেক্সসহ তিনজন আহত হন। এ সময় শিক্ষার্থীদের পাঁচটি মোটরবাইক ভাঙচুর করেন স্থানীয়রা। এরপর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গেরুয়া এলাকার প্রবেশমুখে জড়ো হন। তখন থেকেই ধাওয়া পালটা ধাওয়া চলতে থাকে।

স্থানীয়রা জানান, ক্রিকেট টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। এ ঘটনায় গেরুয়া বাজারে শিক্ষার্থীদের চারটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন স্থানীয়রা। পরে সাড়ে ৭টার দিকে এলাকাবাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে হিমেল (সরকার ও রাজনীতি-৪৭তম ব্যাচ), নাসিম (ম্যানেজমেন্ট-৪৬ তম ব্যাচ), বিকাশ (জিওলজিক্যাল সায়েন্স-৪৫ তম ব্যাচ), ইয়াসিন আরাফাত (ম্যানেজমেন্ট-৪৩ তম ব্যাচ) ইপ্তি (নৃবিজ্ঞান), সোহাগ (ফিজিক্স- ৪৩ তম ব্যাচ), রুবেল (ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ-৪২ তম ব্যাচ), ও জুবায়েরের (সরকার ও রাজনীতি-৪৫ তম ব্যাচ) পরিচয় মিলেছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, আমি ঢাকা জেলা উত্তর পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেছি। কিন্তু তারা ফোর্স পাঠাতে ব্যর্থ।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে মাত্র দু’জন চিকিৎসক থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ড. শামসুর রহমান বলেন, আমি চিকিৎসক আনার চেষ্টা করছি। তোমাদের ফোনের যন্ত্রনায় তো আমি ডাক্তারদের ফোন দেওয়ার সুযোগই পাচ্ছি না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের ডা. মাহফুজ বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের বেশিরভাগেরই মাথা, হাত, পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম ছিল। সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দুই জনের অবস্থা গুরুতর, তাদের সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত