শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২০, ১৩:৪২

সাহস ডেস্ক

রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা, মাইগ্রেশন ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল কলেজ কর্মচারীদের হামলায় অন্তত ১১ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পরে তারা এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

শনিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। আহত শিক্ষার্থীরা বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আহতদের মধ্যে আহত চার থেকে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের হাত ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে রায়হান, তাসিন, ফওজিয়া, জেবা ও সুস্মিতা হাসপাতালের ৩১ ও ১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তারা প্রত্যেকেই দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় রাতেই শিক্ষার্থীরা বাদী হয়ে চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পরে ওই মামলায় নগরীর খড়খড়ি এলাকা থেকে মিঠু নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিলেন শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসব অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত শেষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শাহ মখদুম কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানায়, অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধীনে পরিচালিত কলেজগুলোতে মাইগ্রেট করতে হবে এবং তারা নতুন করে আর শিক্ষার্থী ভর্তি নিতে পারবে না।

শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজ বন্ধ ঘোষণার পর শনিবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকা থেকে একটি দল রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শনে আসার কথা। এ খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা বিকেলে কলেজ ক্যাম্পাসে যান। এরপর ক্যাম্পাসে ঢুকতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। পরে সবাইকে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় এমডির ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা বাঁশ ও লোহার রড দিয়ে শিক্ষার্থীদের এলোপাথাড়ি পেটানো শুরু করে। পরে শিক্ষার্থীদের চিৎকারে বাইরের লোকজন জড়ো হতে শুরু করলে গেট খুলে দেওয়া হয়। এ সময় আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

চন্দ্রিমা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ব্রজগোপাল জানান, ছাত্রীরা তাদের হোস্টেলে জামাকাপড় নিতে এসেছিলেন। এটা নিয়ে সেখানে গণ্ডগোল হয়েছে বলে তিনি খবর পান। পরে দ্রুত সেখানে পুলিশ পৌঁছায়। এ ব্যাপারে রাতে শিক্ষার্থীরা থানায় অভিযোগ দেন। পরে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে আইনত ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ।

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, শনিবার মন্ত্রণালয় থেকে কলেজ পরিদর্শনের কথা। এ বিষয়ে খোঁজ নিতে তারা ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন। ওই সময় কিছু ছাত্রী তাদের জামাকাপড় নিতে হোস্টেলে ঢুকেছিলেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামানসহ কর্মচারীরা বাঁশ ও লোহার রড দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পিটিয়ে আহত করেন। হামলাকারীরা ছাত্রীদের শ্লীলতাহানিও করেছেন। ছবি তুলতে গেলে তাদের ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে।

কলেজ কর্তৃপক্ষের মদদে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার কথা অস্বীকার করে শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনিরুজ্জামান জামান স্বাধীন বলেন, আমি মেডিক্যাল কলেজের অফিসে বসে কাজ করছিলাম। বাইরে হৈ-চৈ  শোনার পর এসে দেখি শিক্ষার্থীরা রাস্তায়। তাদের সঙ্গে কথা বলতে পুলিশ এসেছে। শনিবার (২৮ নভেম্বর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি টিম আসার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে কিছু শিক্ষার্থী পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এখানে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত