রাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীকে হুমকির অভিযোগ; থানায় জিডি

প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ১২:৫৩

রিজভী আহমেদ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীকে প্রশাসন ও ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে রবিবার সন্ধ্যায় নগরীর মতিহার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ওই শিক্ষার্থী।

ওই শিক্ষার্থীর নাম আব্দুল মজিদ অন্তর। তিনি চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগে এমফিল এ পড়াশুনা করছেন। এর আগে তিনি রাবি কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন।

সাধারণ ডায়েরিতে তিনি উল্লেখ করেন, রাবিতে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে হুমকি দেয়া হয়। এরপর আবরার হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলনে অংশ নেয়ার এক ছাত্রলীগ নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাকে হুমকি দেয়। এছাড়া গত ৬ অক্টোবর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন করার আগে সেদিন দুপুরে এক গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা তাকে তুলে নিয়ে যায়। এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত আটকে রাখে। সেখানে তাকে প্রশাসনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন না করার পরামর্শ দেয়া হয়। কোন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে বসে চা খেলেও প্রক্টর তাদের হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বলেও জিডিতে উল্লেখ করা হয়।

ভুক্তভোগী আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, ‘কয়েকদিন আগে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু ফেসবুকে আমাকে হুমকি দেন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু বলেন, আন্দোলন চলাকালে আব্দুল মজিদ অন্তর ও সাকী ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছিল। সেটা বলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে ‘দুই কুলাঙ্গার তোদের সাথে দেখা হবে রাজপথে আসিস’ এটা বলেছি। এটা আমি সাংগঠনিকভাবে লিখেছি, রাজপথে আসিস দেখা হবে। কোন ধরনের হুমকি দেয়া হয়নি।

হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি কাউকে হুমকি দেয়নি। আমি কেন হুমকি দেবো? ওসব অভিযোগ মিথ্যা।’

নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, সন্ধ্যায় ওই শিক্ষার্থী জিডি করেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার সঙ্গে আইন বিভাগের এক চাকরি প্রত্যাশীর স্ত্রীর দর কষাকষির ফোনালাপ ফাঁস হয়। এতে উপ-উপাচার্যের জামাতা ও এক আওয়ামী লীগ নেতার মেয়ে নিয়োগ পেলেও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পাওয়া নুরুল হুদা নামের ওই চাকরি প্রত্যাশীর নিয়োগ হয়নি। এর আগে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের ‘জয় হিন্দ’ স্লোগান নিয়েও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১ অক্টোবর থেকে নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত এবং প্রশাসনের পদত্যাগ দাবিতে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ওই আন্দোলনে আব্দুল মজিদ অন্তর সক্রিয় অংশগ্রহণ করে আসছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত