ছাত্রলীগের বাধায় পণ্ড ডাকসু ভিপি নুরের ইফতার

প্রকাশ | ২৬ মে ২০১৯, ১২:৩৭

অনলাইন ডেস্ক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরের ইফতার অনুষ্ঠানে জোরপূর্বক বাধা প্রয়োগ করে পণ্ড করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার উদ্যোগে শহরের মসজিদ সড়কের গ্র্যান্ড এ মালেক চায়নিজ রেস্টুরেন্টে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে গিয়েছিলেন নুর।

তবে, পুলিশ পাহারায় ভিপি নুর ওই অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে গেলে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা রেস্টুরেন্টে তালা লাগিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেলের দাবি, জেলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই ইফতার অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে।

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল গ্র্যান্ড এ মালেক চায়নিজ রেস্টুরেন্টে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ জন্য তারা রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষকে বিলও পরিশোধ করেন। তবে ওইদিন বিকেলে জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ইফতার অনুষ্ঠানে জোরপূর্বক বাধা প্রয়োগ করে পণ্ড করে দেয় এবং রেস্টুরেন্টে তালা লাগিয়ে দেয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, “ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর গতকাল দুপুরে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু অনুষ্ঠান ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেওয়ায় তা নিরসনে সংশ্লিষ্ট ট্রেনটি আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর রেলওয়ে স্টেশনে বেলা সাড়ে তিনটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত আটকে রাখা হয়। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা তাকে তালশহর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে আসেন। ওই রেস্টুরেন্টে নুর করা পাহারার মধ্যে ছিলেন।”

আয়োজক সূত্র আরও জানায়, ওইদিন সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে ভিপি নুরুল হক গ্র্যান্ড এ মালেক রেস্টুরেন্টে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ দেখতে পেয়ে আয়োজকদের নিয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে রাস্তায় অবস্থান নেন এবং সেখানেই ইফতার করেন।

এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের ডাকসুর ভিপি নুর বলেন, “ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কেনো এ কাজ করেছেন তা আমার বোধগম্য নয়। আমি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি জানিয়েছি। আমাদের সঙ্গে যদি জামায়াত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতা থাকত তাহলে প্রধানমন্ত্রী দাওয়াত দিয়ে গণভবনে নিতেন না। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এ ঘটনার যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করি।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ভিপি নুর প্রায়ই সরকারবিরোধী বক্তব্য দেন। তাছাড়া, ওই রেস্টুরেন্টে জামায়াত–শিবিরের নেতা-কর্মীরা জড়ো হবে শুনে সেখানে বাধা দেওয়া হয়েছে। তবে নুরকে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। যদি বাধা দেওয়া হতো তাহলে তিনি সেখানে অবস্থান করতে পারতেন না।”

রেস্টুরেন্টে তালা লাগানোর বিষয়ে জানতে চাইলে গ্র্যান্ড এ মালেক চায়নিজ রেস্টুরেন্টের মালিক আবদুল মালেক বলেন, “ছাত্রলীগ পরিচয়ে কয়েকজন ছেলে এসে ইফতার আয়োজকদের বের করে দিয়ে রেস্টুরেন্টে তালা লাগিয়ে দেয়।”