রাবি উপাচার্যকে সাত দিনের মধ্যে পদত্যাগের আইনি নোটিশ

প্রকাশ | ১৬ মে ২০১৯, ১৩:৪৫

রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য হিসেবে দ্বিতীয় দফায় নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সাত দিনের মধ্যে পদ থেকে অপসারণ চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল সেলের প্রশাসক ড. শাহিন জোহরা নোটিশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য এখনও অফিসিয়ালি নোটিশের কপি গ্রহণ করেননি। কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সালমান ফিরোজ ফয়সালের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহা. মুজাহিদুল ইসলাম রাবি উপাচার্য, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবসহ ছয়জনকে নোটিশ প্রেরণ করেন।

আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের মে মাসের ৭ তারিখে  দ্বিতীয় মেয়াদে অধ্যাপক আব্দুস সোবহান উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পরে উপাচার্য থেকে নিজ বিভাগ ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে জুন মাসের ২১ তারিখে দুপুরে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করে। একইদিনে বিকালে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। এতে করে উপাচার্য পদে সাময়িক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল। সেখানে রাষ্ট্রপতির বিনা অনুমতিতে একদিনের জন্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আখতার ফারুককে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও নীতিবিরোধী।

আবার পুনরায় একই তারিখ বিকালে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। জুলাই মাসের ২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের এক্সটা অর্ডিনারি সভায় জুন মাসের ২১ তারিখের স্বেচ্ছায় অবসর অনুমোদিত হয়। সিন্ডিকেটের উক্ত সভায় বেআইনিভাবে নিজে সভাপতিত্ব করেন।

আরও বলা হয়েছে, ২০১৭ জুন মাসের ২৪ তারিখে এক পত্রের মারফতে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন যে তিনি ২৯ তারিখে অবসর গ্রহণ করবেন । মহামান্য রাষ্ট্রপতি সেটা গ্রহণ করেন এবং অবসর পরবর্তী উপাচার্যের দায়িত্ব পালনের অনুমতি প্রদান করেন। এর আগেই একই মাসের ২১ তারিখে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।

কিন্তু তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে সত্য গোপন রেখে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন। ডিসেম্বর মাসের ৩১ তারিখে সিন্ডিকেটের ৪৭৩ তম সভায় উপাচার্য নিজেই সভাপতিত্ব করে তার ভবিষ্য তহবিলের জমাকৃত অর্থ সুদসহ উত্তোলন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। উপাচার্য তার পেনশন ভাতার ৮০,৮৭,৮৬৯.০০ (আশি লক্ষ সাতাশি হাজার আটশত উনসত্তর টাকা) বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে  উত্তোলন করেন।

দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার পরে হঠাৎ করে নিজ বিভাগ থেকে পদত্যাগের কারণ ছিল, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসের ৯ তারিখে জারীকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন পাশ কাটিয়ে তার প্রাপ্য পেনশনের শতভাগ টাকা উত্তোলন করা।

উক্ত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ১ জুলাই ২০১৭ তারিখ হতে পেনশনারগণ তাদের প্রাপ্য পেনশনের শতকরা ৫০ ভাগ বাধ্যতামূলক সমর্পণ করে অবশিষ্ট ৫০ ভাগের নির্ধারিত হারে মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩’ লঙ্ঘন করে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে অসত্য তথ্য প্রদান করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মত সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা হারিয়েছেন। উপাচার্যকে এই আইনি নোটিশ পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে পদত্যাগ করার কথা বলা হয়েছে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ