সুনামগঞ্জে কয়লা-পাথর ব্যবসায় ধ্বস, দিশেহারা আমদানিকারকেরা

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২২, ১৭:১৮

সাহস ডেস্ক

ডলারের দাম বাড়ায় সুনামগঞ্জের কয়লা-পাথর ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে। আমদানিকারকদের বেশিরভাগেই এলসি করা ছেড়ে দিয়েছেন। তিন মাসে আগের আমদানি করা পাথরের বিল আসছে, ডলারের নতুন রেটে। তাতে লাখে ১৫ হাজার টাকা বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে। এছাড়া ব্যাংকগুলোও বন্ধকি সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকেরা।

আমদানিকারক সমিতির হিসাব অনুযায়ী জুন মাসে ২০ হাজার টন পাথর আমদানি হয়েছে। জুলাইয়ে নেমেছে ১১ হাজার টনে। ব্যাংকের দায়িত্বশীলরা বলেছেন, ডলারের দাম বাড়ায় এলসি সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।

আমদানিকারকেরা জানান, ডলারের মূল্য বাড়ায় ট্যাক্স বেড়েছে। পাথরের দাম ভারতে বেড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে মূল্য বাড়েনি। এছাড়া জুনের পর থেকে জমি-বাড়ি বন্ধক রেখেও ব্যাংক এলসি দিচ্ছে না, জুনের আগে মোট টাকার ২০ ভাগ টাকা পরিশোধ করলে শতভাগ এলসি দিতো ব্যাংকগুলো। এখন শতভাগ টাকাই ক্যাশ দিতে হচ্ছে। তাতে অপেক্ষাকৃত কম পুঁজি যাদের, তারা সমস্যায় পড়েছেন। ডলারের দাম বাড়তি ও ব্যাংকিং সুবিধা না পাওয়ায় বেকায়দায় পড়া আমদানিকারকেরা ব্যবসা গুটিয়ে বসে আছেন। স্থবিরতা দেখা দিয়েছে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের বৃহৎ শুল্কবন্দর তাহিরপুরের বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলিতে।

বন্দরের বড় আমদানিকারক খসরুল আলম বলেন, ডলারের দাম বাড়ার পর এলসি কমিয়ে দিয়েছি, ক্রেতা ধরে রাখার জন্য যেটুকু না করলেই নয়, সেই পরিমাণে এলসি করছি।

তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক সমিতির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের বলেন, জায়গা-বাড়ি ব্যাংকে বন্ধক দিয়ে জুনের আগেও ২০-৩০ শতাংশ ক্যাশ টাকা দিয়ে এলসি করা গেছে। এখন শতভাগ ক্যাশ টাকা দিতে হচ্ছে। তিন মাসে আগে কেনা কয়লা-পাথরের টাকার বিল আসছে নতুন ডলার রেটে। তাতে বড় লোকসানে আমদানিকারকেরা। বেশিরভাগ আমদানিকারক কম রেটে কয়লা-পাথর বিক্রি করে এখন বেশি রেটে মূল্য পরিশোধ করছেন। এসব নানা কারণে বন্দরগুলোতে স্থবিরতা নেমে এসেছে। আমদানিকারকেরা ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন।

তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক সমিতির সচিব রাজেশ তালুকদার জানান, মার্চ মাসে ডলারের দাম বাড়া শুরু হয়েছিল, এপ্রিল মাস থেকেই এলসি কমে যেতে শুরু হয়। এরপর ক্রমেই কমছে এলসি দেওয়া। সমিতির হিসাব অনুযায়ী জুনে তাহিরপুর বন্দরগুলো দিয়ে ২০ হাজার টন পাথর নামে, জুলাইয়ে নেমেছে ১১ হাজার টন। কয়লা বর্ষাকালীন সময়ে এমনিতেই কম নামে বলে জানান রাজেশ তালুকদার।

উত্তরা ব্যাংকের সুনামগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক শহীদুল ইসলাম জানান, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত অর্থাৎ ডলারের দাম বাড়ার আগের তিন মাসে তিন দশমিক সাত মিলিয়ন ডলারে ৫১৯ টি এলসি হয়েছে। এপ্রিল থেকে জুনে হয়েছে দশমিক ৫৭ মিলিয়ন ডলারে ১৩০ টি এলসি। এরপর ক্রমশই এলসি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত