উত্তরবঙ্গে চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড!

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:১০

ডিজার হোসেন বাদশা
দেশের উত্তরবঙ্গে (পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও নীলফামারী) চা উৎপাদনে সর্বোচ্চ এক নতুন রেকর্ড গড়ে উঠেছে। করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রকোপের এই সময়ে নতুন এই রেকর্ডে উৎসাসিত চা শ্রমিক -মালিকেরা। 

জানা গেছে, ২০২০ সালে সমতলের ১০টি চা বাগান ও ৭ সহস্রাধিক ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে মোট ১ কোটি ৩ লক্ষ অর্থাৎ ১০.৩০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এ বছরে চা জাতীয় উৎপাদন হয়েছে ৮৬.৩৯ মিলিয়ন কেজি। অর্থাৎ উত্তরাঞ্চলের সমতলের চা বাগান থেকে ১১.৯২ শতাংশ জাতীয় উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে।

রবিবার (২৪ জানুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন চা বোর্ড পঞ্চগড় এর প্রকল্প পরিচালক ও ঊর্ধবতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন।

বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় ১০টি নিবন্ধিত ও ১৭টি অনিবন্ধিত চা বাগান এবং ৭,৩১০টি ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান (নিবন্ধিত ১,৫১০টি) এর মোট ১০,১৭০.৫৭ একর জমিতে চা চাষ হয়েছে। উক্ত চা বাগানসমূহ থেকে ২০২০ সালে ৫,১২,৮৩,৩৮৬ কেজি সবুজ চা পাতা উত্তোলন করা হয়েছে। যা থেকে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও এর ১৮টি চলমান চা কারখানায় ১ কোটি ৩ লক্ষ কেজি চা উৎপন্ন হয়েছে। ২০১৯ সালে উত্তরবঙ্গে চা আবাদীর পরিমাণ ছিল ৮৬৮০.৮৬ একর ও চা উৎপাদনের পরিমাণ ছিল  ৯৫.৯৯ লক্ষ কেজি। বিগত বছরের তুলনায় ২০২০ সালে ১,৪৮৯.৮৯ একর চা আবাদী বৃদ্ধি পেয়েছে ও ৭.১১ লক্ষ কেজি চা বেশি উৎপন্ন হয়েছে।  
 
বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল জহিরুল ইসলাম বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশের সকল চা বাগানের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। এছাড়াও উৎপাদনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিধি মেনে চা নিলাম কেন্দ্র চালু রাখা, সঠিক সময়ে ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণ, বাগানে কঠোরভাবে কোভিড প্রটোকল নিশ্চিতকরণ, চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, রেশন এবং স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণের ফলে ২০২০ সালে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, উত্তরবঙ্গে ক্ষুদ্র চা চাষীদের দোরগোড়ায় প্রশিক্ষণ সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে 'ক্যামেলিয়া খোলা আকাশ স্কুলে'র মাধ্যমে চা আবাদ বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহের ফলে সমতলের চা বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে এ বছর রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। 

পঞ্চগড় চা বোর্ডের ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন জানান, সমতল ভূমিতে চা চাষের জন্য পঞ্চগড় ও এর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এলাকা। দিন দিন উত্তরাঞ্চলে চা চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চা চাষ সম্প্রসারণের জন্য চাষিদের বিভিন্ন সহায়তার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। চাষিদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান দিতে ইতিমধ্যে 'দুটি পাতা একটি কুঁড়ি' নামে একটি মোবাইল অ্যাপস চালু করা হয়েছে। এ আঞ্চলিক কার্যালয়ে একটি পেস্ট ম্যানেজমেন্ট ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে চা চাষিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, চাষের নানান রোগবালাই ও পোকা দমনে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সহায়তা দেওয়া হয়। এ বছর ক্ষুদ্র চাষিরা তাঁদের বাগানের উৎপাদিত কাঁচা পাতার ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় তাঁরা চা চাষে উৎসাহিত হয়েছে, চা বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী বাগানের যত্ন নিয়েছে। আশা করি আগামীতে চা উৎপাদনে আরো সর্বোচ্চ রেকর্ড হবে।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত