রিজার্ভ থেকে ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২০, ১৯:২৮

সাহস ডেস্ক

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভ থেকে ঋণ নেওয়া যায় কিনা এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে যাচাই-বাছাইয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্টদের বিষয়টির প্রভাব ও সম্ভাবনা যাচাই-বাছাই করে দেখতে বলেছেন তিনি।

সোমবার (৬ জুলাই) একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন প্রস্তাব দেন।

প্রায় প্রতি একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী কিছু মন্তব্য, প্রস্তাব, নির্দেশনা দেন। সভা শেষে সেসব সংবাদকর্মীর সামনে তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

তিনি বলেন, একটা যুগান্তকারী প্রস্তাব এসেছে প্রধামন্ত্রীর কাছ থেকে। আমি ওখানে ছিলাম, আমরা এটাকে সমর্থন করি।

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, এটা আমরা ভাবছি, সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। জনগণের অর্থ জনগণের সঞ্চয় তাদের কল্যাণেই ব্যয় হবে। এজন্য যে নিয়ম-কানুন ও নীতিমালা প্রয়োজন সেগুলো আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রণালয় আছে, তারা দেখবে। আমরা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে অবশ্যই সহায়তা করব।

একনেকে প্রধানমন্ত্রীর আজকের প্রস্তাব তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩৬ বিলিয়ন ডলার। সর্বকালের রেকর্ড এটা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিদেশ থেকে ডলারে ঋণ নিই। আমরা নিজেদের টাকা তো নিজেরাই ঋণ দিতে পারি। সরকার নিজেই ঋণ নিতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের পক্ষে, জনগণের পক্ষে এই টাকা সংরক্ষণ করে। রিজার্ভ তাদের আয়ত্তেই আছে। ওখান থেকে আমরা প্রকল্পের জন্য ঋণ নিতে পারি।

এম এ মান্নান আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হলো যে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চিন্তাভাবনা করে খুঁটিনাটি দেখবে। অর্থনৈতিক প্রভাব কী হতে পারে। যেমন প্রধানমন্ত্রীর ধারণা, সাধারণ তিন মাসের আমদানি ব্যয় হাতে রাখা নিরাপদ। তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমপরিমাণ বিদেশি টাকা যদি হাতে থাকে, তাহলে স্বস্তিদায়ক মনে করা হয়। সুতরাং তিনি মনে করেন যে, আমদানি ব্যয়ের যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ হাতে রিজার্ভ রেখে বাকিটা অভ্যন্তরীণ নিজেদের অর্থে নিজেরাই ঋণ নিতে পারি এবং তুলে দিতে পারি।

রিজার্ভ আমাদের একমাত্র ব্যাকআপ। রিজার্ভ থেকে প্রকল্পের জন্য ঋণ নেয়াটাকে আপনি যৌক্তিক মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে আমি এটা মনে করি। আমি সমর্থন করি দুটো কারণে। একটা হলো আমাদের নিজস্ব টাকা ডান হাত থেকে বাম হাতে আনলাম। আবার ডান হাতে ফেরত দেব। এটা আগে নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ফেরত যায়। এটা হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দ্বিতীয়ত, বিদেশ থেকে ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে অনেক শর্ত থাকে, এটা-সেটা থাকে, সেগুলো মানতে হয়। মানতে গিয়ে ব্যয় বেড়ে যায়। ঋণচুক্তি সই করার পরে প্রক্রিয়া করতে অনেক সময় দেখা যায়, এক থেকে দেড় বছর পার হয়ে যায়। তখন আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। ডলারের মান বেড়ে যায়, টাকার মান কমে যায়। আমাদের নিজেদের টাকা হলে নিজেরাই খরচ করবো। ভয়ের কারণটা হলো যে ডলারটা দেব, তা ফেরত আসতে হবে। এখানে যদি ওই ধরনের কোনো ভীতি থাকে, যেটা ব্যাংকে আমাদের নন-পারফর্মিং (ঋণখেলাপি) ঋণের ক্ষেত্রে দেখেন। তাহলে আমি হাত দেব না। ওটা নিশ্চিত হয়ে আমি করতে রাজি আছি। আমি মনে করি, এটা সম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত