পুঁজিবাজারকে টেকসই স্তরে উন্নীত করা হবে : অর্থমন্ত্রী

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:৫১

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল পুঁজিবাজার উন্নয়নে সরকারি সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, পুঁজিবাজারের যেসব চ্যালেঞ্জ আছে সেগুলো আমরা দূর করবো। পুঁজিবাজারের সক্ষমতা ফেরাবো। যাতে করে পুঁজিবাজারটা যেন টেকসই হয়। বাজারটি যেন একটা ভালো অবস্থানে আসতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আপানারা সবাই জানেন আমাদের অর্থনীতি কতো শক্তিশালী। আমাদের অর্থনীতি যতটা গতিশীল, পুঁজিবাজারকে ততটা গতিশীল হিসেবে দেখতে চাই।’

অর্থমন্ত্রী রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে পুঁজিবাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে অংশীজনদের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী এক দীর্ঘ মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান মো. খাইরুল হোসেন, বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সিকিউকে মুস্তাক আহমেদ, স্টক একচেঞ্জসমূহের কর্মকর্তাগণ সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

পুঁজিবাজার অর্থনীতির অন্যতম মৌলিক এলাকা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, সেজন্য সরকার কখনোই পুঁজিবাজারকে অবহেলা করে না। মধ্য, উচ্চ থেকে সাধারণ, সবাই পুঁজিবাজারে জড়িত। তাই এটি সরকারের বিশেষ ও সতর্ক মনোযোগ দাবি করে।


তিনি বলেন, আমরা সবাই ঐকমত্যে পৌঁছে গেছি, পুঁজিবাজার উন্নয়নে সবাইকে কাজ করতে হবে। সরকার তার সব সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে পুঁজিবাজার উন্নয়ন কাজ করা অব্যাহত রাখবে।

তিনি আরো বলেন, ভালো ভালো সরকারি কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসবে। পুঁজিবাজারে শেয়ারের মূল্য যাতে যথাযথ হয় সেই কাজও করবো। এজন্য বিশেষ কমিটি করে দিয়েছি, তারা ঘুরে ঘুরে এসব দেখবে।

ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করে পুঁজিবাজারে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনবো। পুঁজিবাজারে আমরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের ‘জিরো টলারেন্স’নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এই বাজারে আমরা শতভাগ আস্থা অর্জন করতে চাই।


তিনি বলেন, বাজারে যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে সুশাসন। আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেই এই বাজার প্রতিষ্ঠা করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজারের শেয়ার যেন যথাযথ দামে আসে এটা নিশ্চিত করবো। আমরা আশ্বস্ত করতে পারি, পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করবো। এখন থেকে আপনারা কেউ অপবাদ দিতে পারবেন না যে, আমরা ন্যায়বিচার করি না অথবা আমরা কারোর প্রতি দুর্বল। পুঁজিবাজারে যিনি অপরাধ করবেন, তিনি যেই হোন না কেন, যতো বড় শক্তিশালী হউন না কেন, আইন অনুযায়ী ন্যায়বিচার করবো।

পুঁজিবাজারে কোনো ধরনের গরমিল হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বিএসইসির অধীনে একটি বিশেষ কমিটি কাজ করবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এই ‘ইন্টারনাল অডিট কমিটি’ গঠন করবে। কোম্পানিগুলোর শেয়ারের ন্যায্যমূল্য পায়, কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম যেন অতিমূল্যায়িত না হয়, সেদিক নজর রাখবে ওই কমিটি।

তিনি বলেন, কোম্পানিগুলো যাতে ফেয়ার প্রাইস পায়, সে ব্যবস্থা আমরা করব। কারণ তালিকাভুক্তির সময় অতিম্ল্যূায়িত হয়ে গেলে বাজারে লেনদেন শুরু করার পর শেয়ারের দাম আবার কমে যায়। সে সব পরিবেশ যাতে সৃষ্টি না হয়, এজন্য আমরা একটি বিশেষ কমিটি করে দিয়েছি।

মন্ত্রী বলেন, তাদের কাজ হবে শেয়ারবাজারে তালিক্তাভুক্ত যেসব কোম্পানি আছে, তাদের সারাবছর পর্যবেক্ষণ করবেন। ওই কোম্পানি অপারেশনে আছে কিনা, নাকি বন্ধ হয়ে গেছে, সেগুলোর অবস্থা কতটুকু ভালো, সেসব বিষয় তারা পর্যবেক্ষণ করবেন।

‘ওই বিশেষ কমিটি নতুন আসা আইপিও শেয়ারের দাম অতি মূল্যায়িত হচ্ছে কিনা, তাও পর্যবেক্ষণ করবে’ যোগ করেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিক ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো অবশ্যই পুঁজিবাজারে আসবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে তালিকা বহির্ভূত বিমা কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভিত্তি দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও যেসব কোম্পানির শেযারের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে, তাদের কড়া নজরদারির মধ্যে আনা হবে, এবং অনিয়ম পাওয়া গেলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত