‘বেল আউটের মধ্যেও ভালো করতে পেরেছে না পদ্মা ব্যাংক’

প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:৪৬

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বিগত সময়ে আপনারা দেখেছেন একইভাবে সাবেক ফারমার্স ব্যাংক (পদ্মা ব্যাংক) সরকারের সার্পোট নিয়েছে। সমস্ত চিন্তা-ভাবনা একসঙ্গে করে সেটাকে আমরা একটা বেল আউটের মধ্যে নিয়ে এসেছি। সেটা এখনও যে সবটা ভালো কাজ করতে পেরেছে তা না। আগামীতে হয়তো এটা করবে।’

৩ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) মিলনায়তনে ‘কম্পিটিশন, কনসেনট্রেশন অ্যান্ড ব্যাংকিং স্ট্যাবিলিটি’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন ডেপুটি গর্ভনর।

ডেপুটি গর্ভনর বলেন, ‘অন্যদিকে পাবলিক কনফিডেন্সের বিষয়টিও রয়েছে। সেটা যাতে ইরোরের না হয়। কিন্তু ক্রাইসিসের দিকে হয়তো এটা টার্ন করছে না। টার্ন করবে না সেটাও কিন্তু বলা যায় না।’

তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের সাইজ অনুযায়ী একেকজনের একেকরকম অবস্থা। কখনও যদি একটি ছোট ব্যাংকও অসুবিধায় পড়ে যায়, আর আমরা সিস্টেমিক রিস্কের কথা যদি নাও বলি, ডোমিনো ইফেক্ট করলে আমাদের অনেক বেশি অসুবিধায় ফেলে।’

এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংক ভালো করবে, সেই ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। একটি ব্যাংক যখন নিচের দিকে চলে আসে, তখন মানুষের আস্থায় পরিপূর্ণভাবে পৌঁছাতে গেলে একটু সময় লাগে। তবে এখন যেহেতু সরকারি ব্যাংকগুলো বেশির ভাগ মালিকানায় রয়েছে, সেই ব্যাংকগুলোর এমডিরা পদ্মা ব্যাংকের বোর্ডে বসছে। কাজেই আগে যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছিল নতুন করে হয়তো কোনো সমস্যা তৈরি হবে না। নতুন করে যদি সমস্যা তৈরি না হয় আস্তে আস্তে তারা এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসবে।’

এসময় আমানতের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেশির ভাগ সাধারণ ও ছোট ছোট আমানতকারীদের অর্থ ফেরতে দিয়েছে পদ্মা ব্যাংক। যে সমস্ত প্রাতিষ্ঠানিক ডিপোজিট বিশেষ করে সরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত, আধাসরকারি প্রকল্পের টাকা এখনও ফেরত দিতে পারেনি। একসঙ্গে তাদের পক্ষে এটা দেওয়া সহজ না।’

ডেপুটি গর্ভনর বলেন, ‘কারণ একই সঙ্গে তাদের নতুন ডিপোজিট যদি না বাড়ে, আর শুধু যদি দিতেই থাকে তারা এটা সেভাবে ম্যানেজও করতে পারছে না। আমরা আশা করছি ব্যাংকটি যেহেতু আমরা সেইভাবে নিয়ে যাচ্ছি, মানুষের আস্থা আস্তে আস্তে বাড়বে। তারা স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে সব জায়গায় কাজ করতে পারে। তখন মানুষের আস্থা ফিরে আসবে। মানুষের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হয়তো একটু সময় লাগতে পারে। কোনো সমস্যারই তো আমাদের হাতে রেডি সলিউশন থাকে না।’

২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরুর তিন বছরের মাথায় আর্থিক সংকটে পড়ে তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংক। ব্যাংকটি বাঁচাতে মূলধন সহায়তা দেয় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী, রূপালী, অগ্রণী, জনতা ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।

চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি ফারমার্স ব্যাংকের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় পদ্মা ব্যাংক। চলতি বছরের জুন শেষে পদ্মা ব্যাংকের খেলাপিঋণের পরিমাণ ৩৬১১ কোটি টাকা। একবছর আগেও ছিল ১৫২১ কোটি টাকা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত