চক্রবৃদ্ধি হারে নয় সুদ হবে সহজ ও সরল: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৮ মার্চ ২০১৯, ১৯:৪৮

অনলাইন ডেস্ক

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, ‘চক্রবৃদ্ধি হারে আর সুদ নেওয়া হবে না, চক্র বৃদ্ধি হারে সুদের ফলে দেশে ঋণ খেলাপির সংখ্যা বাড়ছে। আগামী বাজেট থেকে সুদ হবে সহজ ও সরল। ১০ শতাংশ হারে সুদ হলে বছর শেষে ১০ টাকা নেওয়া হবে।’

১৮ মার্চ (সোমবার) শেরে বাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালক পর্যদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এ কথা জানান মন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘চক্র বৃদ্ধি হারে সুদের ফলে গ্রাহকদের নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ব্যাংক ঋণে দেখা যায়, তিন মাস, চার মাস ও ছয় মাসে সুদের হিসাব করা হয়। সুদের ওপরে আবারও সুদ বসানো হয়। এটা আগামী বাজেট থেকে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সুদের হিসাব আর চক্রবৃদ্ধি হারে হবে না, সরল হারে হবে।’

ব্যাংকে পরিচালক নিয়োগ প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘ব্যাংক যোগ্য ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। মৌখিক পরীক্ষা ভালোমতো নিয়েই ব্যাংক পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে। ব্যাংক পরিচালক নিয়োগের বিষয়ে আমার কাছে কোনো সুপারিশ আসলে সেটা গ্রহণ করা হবে না। যোগ্য ব্যক্তিদের হাতেই ব্যাংক তুলে দেওয়া হবে।’

ব্যাংকে ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকে কিছুটা ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে। এগুলো পরিষ্কারে হাত দেওয়া হবে। এই বিচ্যুতি নতুন করে হয়নি, দীর্ঘদিনের। মানুষ যেন ব্যাংকমুখী হয় সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করবো। ব্যাংকে বিশেষ অডিটের ব্যবস্থা করা হবে। আমাদের ব্যালেন্স সিট কতো সেটা জানা যাবে।’

ব্যাংকের গ্রাহক প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যারা ব্যাংকের ভালো গ্রাহক তাদের সহায়তা করা হবে। যারা ব্যাংকের টাকা নিয়ে দিচ্ছে না তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। বিদ্যমান আইন প্রয়োগ করে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হবে। খারাপ-অসাধু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো আপস নাই। আইনি প্রক্রিয়ায় টাকা আদায় করা হবে। খারাপ ব্যবসায়ীদের যেসব ব্যবসায়ী সহায়তা করেছে তাদেরও ছাড় দেওয়া হবে না।’

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কাউকে জেলে পাঠিয়ে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে কিছু করা হবে না। আমরা চাই না কেউ বিপদে পড়ুক।’

ব্যাংক খাতের প্রসংশা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংক খাত ভালো করছে, এটা আমাদের স্বীকার করতে হবে। এই খাত ভালো না করলে প্রবৃদ্ধি অর্জনে এত ভালো করতাম না। আমরা আশা করছি আগামীতে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবো। আমাদের অনেক টাকা দরকার। শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে অনেক টাকা দরকার। মেগা প্রকল্পে এখনই টাকা ছাড় করার সময়। এগুলো করতে হলে ব্যাংক খাতের উন্নয়ন জরুরি।’

মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম প্রমুখ।