যশোরের গদখালিতে ৫০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির সম্ভাবনা

প্রকাশ | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:২৫

অনলাইন ডেস্ক

যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালিতে জমে ওঠেছে ফুলের বেচাকেনা। এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এ বাজারে ৫০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম। সামনের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, বসন্ত উৎসব ও ভ্যালেনটাইন দিবস উপলক্ষে ফুল বেচা-কেনায় ব্যস্ত ফুল চাষি ও ক্রেতারা। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকারি ফুল ক্রেতারা আসতে শুরু করেছেন গদখালিতে। সারা বছর ফুলচাষিরা ফুল বিক্রি করলেও তাদের মূল লক্ষ্য থাকে ফেব্রুয়ারি মাসের তিনটি উৎসব। এছাড়া বাংলা নববর্ষেও ফুলের জমজমাট বেচাকেনা হয়ে থাকে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গদখালি ও পানিসার এলাকায় সাড়ে ৬ হাজারের বেশি কৃষক বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন রজনীগন্ধ্যা, গোলাপ, রডস্টিক, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা, জিপসি, কেলেনডোলা, চন্দ্রমল্লিকাসহ ১২ ধরনের ফুল।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ৩ উপজেলায় ফুল চাষ হয়ে থাকে। এ জেলায় মোট ৬৪৬ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ঝিকরগাছা উপজেলায় ফুল চাষ হয়েছে ৬৩৫ হেক্টর জমিতে। ঝিকরগাছায় ফুল চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ৮শ’ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে বলে জানান ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম। এ উপজেলার গদখালি, পানিসারা, হাড়িয়া, নীলকন্ঠ নগর, চাওরা, কৃষ্ণচন্দ্রপুর, চাঁদপুর, বাইশা, পাটুয়াপাড়া, নারানজালি গ্রামসহ প্রায় ৫০টি গ্রামে ফুল চাষ হয়ে থাকে। এছাড়া শার্শা উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে এবং কেশবপুর উপজেলায় ফুল চাষ হয়েছে ১ হেক্টরের সামান্য বেশি জমিতে।

পানিসারা গ্রামের ফুলচাষি হারুন-অর-রশিদ ও আবু মুসা জানান, তারা প্রত্যেকে এক একরের বেশি জমিতে ফুল চাষ করেছেন। ফুলের উৎপাদনও ভালো হয়েছে।ইংরেজি নববর্ষসহ সামনের তিনটি উৎসবে তারা সবচেয়ে বেশি ফুল বিক্রি করে থাকেন। 

গদখালি বাজারের ফুলের পাইকারি ব্যবসায়ী আবু সাইদ জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম থেকেই ফুলের বাজার দর বেশ ভালো। চলতি মাসে সামনের তিন উৎসবের আগে ফুলের দাম আরো বাড়বে। ফলে চাষিরা লাভবান হবে বলে তিনি জানান। 

এ বাজারের ফুলের আরেক পাইকারি ব্যবসায়ী শেখ আহমেদ বলেন, তিনি প্রতিদিন ঢাকা ও চট্রগ্রামে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার ফুল পাইকারি বিক্রি করেন। 

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপংকর দাস জানান, এ উপজেলার গদখালি, পানিসারা, নাভারন ও মাগুরা ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ হয়ে থাকে।এ চারটি ইউনিয়নের সাড়ে ৬ হাজারের বেশি ফুল চাষি ফুল চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। এ বছর উপজেলায় ৬৩৫ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছে। ফুলের চাষ বাড়াতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রদর্শনীসহ ফুলচাষিদের উদ্বুদ্ধকরণ এবং নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে।