ঋণ বিতরণে বেসরকারি ব্যাংকের রেকর্ড

প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০১৮, ১৭:৩৩

সাহস ডেস্ক

তারল্য সংকট ও উচ্চ সুদের হারের পরও বিদায়ী অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ ঋণ দিয়েছে দেশের বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের তুলনায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেসরকারি ব্যাংকের ঋণ বেশি দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৫শ’ ৬৫ কোটি টাকা। শুধু গত অর্থবছরেই নয়, পাঁচ বছরের মধ্যেও সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ঋণ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ বিতরণ সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো ঋণ দিয়েছে ৯ লাখ ৭ হাজার ৬শ’ ২১ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে এসব ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৭৬ হাজার ৫৬ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ ব্যাংক সংগৃহীত আমানতের ৮৫ শতাংশ এবং ইসলামী ব্যাংক ৯০ শতাংশ ঋণ দিতে পারে। অতিরিক্ত ঋণ দেওয়ার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অতিক্রম করে বেশ কয়েকটি ব্যাংক। একারণে তাদের জরিমানাও করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সতর্ক করে চিঠি দেয় আরও বেশ কয়েকটিকে। বিতরণ করা অতিরিক্ত ঋণসীমা চলতি বছরের ১ ডিসেম্বরের মধ্যে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ব্যাংক মালিকদের আবেদনে তা কার্যকর হচ্ছে আগামী বছরের জুলাই থেকে।

আর এসব কারণে বিদায়ী অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে চরম তারল্য সংকটে (নগদ মুদ্রার সংকটে) পড়ে যায় দেশের বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। বেড়ে যায় ঋণ ও আমানতের সুদহার। পরে বেসরকারি ব্যাংকগুলো উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ শুরু করে। কিন্তু তাতেও সাড়া মেলেনি। পরে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ রাষ্ট্রীয় ব্যাংক থেকে বেসরকারি ব্যাংকে রাখার সুযোগ দেওয়া হয়। নগদ জমা সংরক্ষণ (সিআরআর) কমানো হয় এক শতাংশ। 

তারল্য সংকট এবং উচ্চ সুদের হারের মধ্যেও ৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ ঋণ দেওয়ার বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারি ও বেসরকারি মালিকানায় অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে দেশে। এতে আমদানি ব্যয়ও বেড়ে গেছে। অর্থবছরের প্রথমার্ধে ঋণ বিতরণ বেশি হওয়ায় দ্বিতীয়ার্ধে এসে তারল্য সংকট হয়েছে। পরে এর সমাধান করা হয়েছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো ৬ লাখ ৩৯ হাজার ৬শ’ ৪৬ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৯৬ হাজার ৪শ’ ১০ কোটি টাকা বেশি। 

একইভাবে ৯৫ হাজার ১শ’ ৪১ কোটি টাকা বেশি ঋণ দেওয়া হয়েছিল ২০১৪-১৫ অর্থবছরে। ওই সময়ে ঋণ দেওয়ার পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫শ’ ৫ কোটি টাকা। আর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেওয়া হয়েছিল ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫শ’ ৪৫ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)-এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, দেশে যেভাবে উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান হচ্ছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তার অর্ধেকের বেশিতে ভূমিকা রাখছে বেসরকারি ব্যাংক। আর এসব উন্নয়ন চলমান রাখতে ব্যাংকগুলো বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করছে। যেকারণে কয়েক বছরের তুলনায় ঋণ বিতরণ বেড়েছে। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত