বিশেষজ্ঞদের অভিমত

৯ বছরে অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে

প্রকাশ | ০৬ জানুয়ারি ২০১৮, ১৩:৪৬

অনলাইন ডেস্ক

সরকারের ব্যাপক ও দরিদ্রবান্ধব পদক্ষেপের ফলে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পযর্ন্ত গত ৯ বছরে সকল আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী শুক্রবার বাসসকে বলেন, বাংলাদেশে বিগত ৯ বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়, খাদ্য উৎপাদন, রেমিটেন্স, মূল্যস্ফীতি, আমদানি ও রফতানিসহ বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সাফল্য অর্জিত হয়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে। তিনি বলেন, ২০০৯-২০১০ সাল থেকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫.৫৭ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে ৭.২৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ সময়ে গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ৬.৪৪ শতাংশ।

২০১০ সালে মাথাপিছু আয় ৮৪৩ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৭ সালে হয়েছে ১,৬১০ মার্কিন ডলার এবং বিনিয়োগ ২০১০ সালে ২৬.২৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৭ সালে জিডিপির ৩০.২৭ শতাংশ হয়েছে। রফতানি ১৬.২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩৪.৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। রেমিটেন্স ১০.৯৯ বিলিয়ন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১২.৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ ১০.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩৩. ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ২৮৫ বিলিয়ন টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১,১০৭ বিলিয়ন টাকা হয়েছে।

মুসলিম চৌধুরী বলেন, সরকারের সার্বিক ও দরিদ্রবন্ধব নীতি দারিদ্র্য হ্রাসে ব্যাপক অবদান রেখেছে। তিনি বলেন, পাশাপাশি সামাজিক কর্মকান্ড ও নারীর ক্ষমতায়নে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। মানব উন্নয়ন সূচকেও অগ্রগতি হয়েছে। শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ ২০০৬ সালের ২৯.২ শতাংশ থেকে ২০১৬ সালে ৩৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০১৬ সালে প্রতি হাজারে মাতৃমৃত্যু হার ৩.৩৭ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ১.৭৮ শতাংশ হয়েছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বাসসকে বলেন, কিছু রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও বিগত ৯ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি ইতিবাচক অবস্থানে এসেছে। বাংলাদেশ এমডিজি সফলভাবে অর্জন করেছে। এখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অজর্নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
খন্দকার মোয়াজ্জেম বলেন, সরকার অবকাঠামো উন্নয়ন এবং দেশকে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কেন্দ্রে পরিণত করতে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও যোগাযোগ সেক্টরে সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিয়েছে।

তিনি বলেন, মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীর গতির কারণে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশিত নয়। সরকারকে নির্ধারিত সময়ে মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অজর্ণের জন্য অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মকান্ড বাড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন এবং মানবসম্পদ উন্নয়নসহ আর্থ-সামাজিক সূচকে সফল হয়েছে। ভবিষ্যতে এই সাফল্য ধরে রাখতে সরকারকে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পযর্ন্ত গড় বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ ছিল ১৯.৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গড় বাজেট ছিল ২,০৩৫ বিলিয়ন টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বাজেটের আকার ছিল ৩,১৭২ বিলিয়ন টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের জন্য ঘোষিত বাজেট হচ্ছে ৪,০০৩ বিলিয়ন টাকা।

সাহস২৪.কম/বাসস/আল মনসুর