আজ বাঙালির নবান্ন উৎসব

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ১২:০২

আজ ১৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার পহেলা অগ্রহায়ণ জাতীয় নবান্ন উৎসব ১৪২৫। জীবনানন্দের কবিতায় এসেছে ধান টাকা হয়ে গেছে। হ্যাঁ, ধান এভাবেই টাকা হয়ে যায় হেমন্তে। আর টাকা আসা মানেই উৎসব। এজন্য এসময় সারা দেশের বিভিন্নস্থানে মেলা হয়, যাত্রা হয়। বাউল গানের আসর বসে। এগুলোরই সম্মিলিত নাম নবান্ন। 

বাঙালির ঐতিহ্যবাহী, অসাম্প্রদায়িক ও মাটির সঙ্গে চির বন্ধনযুক্ত নবান্ন উৎসবের মাস। প্রবাদে আছে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। এক সময় ঢেঁকির সুরেলা শব্দ ফুটিয়ে তুলত নবান্ন উৎসব। বুদ্ধির ঢেঁকি, আমড়া কাঠের ঢেঁকি, ঢেঁকির মতো মেয়ে - এরকম বহু বাগধারা এখন শুধু পুঁথিতেই বন্দী। নতুন ধানের চাল তৈরির ধুম পড়ে যেত গ্রামবাংলায়। গ্রামে মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহিণী ও বৌ-ঝিরা নিজস্ব ঢেঁকিতে ধান ভাঙিয়ে চাল করত। ধান ভাঙার মাঝে চলত পান খাওয়ার আড্ডা আর হাসি- আনন্দ। আবার অনেক সময় সুরে সুরে গীতও চলত। 

এখন নবান্ন আসে নীরবে। কৃষকের বাড়ি ঢেঁকি নেই, বধূর কণ্ঠে নেই ধানভানা গান। ধান ভাঙাতে যেমন ইঞ্জিন মোটরচালিত যান্ত্রিক কল, তেমনই সব কিছুতে প্রযুক্তির ছোঁয়া। 

রাজধানীতে ১৯৯৮ সাল থেকে ঢাকা শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে নবান্ন উৎসব উদযাপন শুরু হয়। 

জাতীয় নবান্নোৎসব উদযাপন পর্ষদ এর আয়োজনে আজ থেকে দু’দিনব্যাপী ‘ জাতীয় নবান্ন উৎসব ১৪২৫ ’ শুরু হয়ে আগামীকাল চলবে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত।

বরাবরের মতো এবারও উৎসব হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের বকুলতলায়। কাল সকাল ৭টা ১ মিনিটে উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি ব্যাক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। ঢাক-ঢোল বাদনের ও নৃত্যের মধ্যদিয়ে উৎসবের সূচনা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন উৎসব পর্ষদের চেয়ারম্যান লায়লা হাসান। বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, শাহরিয়ার সালাম ও ডা. এ এম শামীম। পরে বের হয় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রা শেষে পুনরায় বিকেল তিনটায় বকুল তলায় শুরু হবে গান, আবৃত্তি, নাটক, আলোচনা। চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত।

নবান্ন উৎসব পর্ষদের আহবায়ক শাহরিয়ার সালাম জানান, এবারের উৎসবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির বিভিন্ন পরিবেশনা থাকছে। নবান্নের নানা কর্মসূচির সঙ্গে এই আয়োজন দর্শক-শ্রোতাদের ভাল লাগবে।

তিনি জানান, উৎসবের দ্বিতীয় দিন ১৬ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত নবান্নের শিশু প্রহর ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ে ২২টি শিশু সংগঠন তাদের নিজ-নিজ পরিবেশনায় অংশ নেবেন। একই সঙ্গে শিশুরা উৎসব প্রাঙ্গণে দিনভর চিত্রাঙ্কণে অংশ নেবেন। তাদের আঁকা ছবিগুলো নিয়ে উৎসবে প্রদর্শনী চলবে। শিশুদের আঁকা ছবির ভিউকার্ড প্রকাশ করা হবে। দু’দিনের উৎসবে বিভিন্ন ইভেন্টে ১২ শত শিল্পী অংশ নেবেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত