কার্টুনিস্ট রফিকুন নবী

প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০১৮, ১২:১০

সাহস ডেস্ক

দেশের খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী, কার্টুনিস্ট, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও অধ্যাপক রফিকুন নবীর ৭৬তম জন্মদিন আজ।

১৯৪৩ সালের এইদিনে (২৮ নভেম্বর) শিল্পী রফিকুন নবী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা রশিদুন নবী পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন এবং মাতা আনোয়ারা বেগম ছিলেন জমিদার পরিবারের সন্তান। পিতার চাকরির কারণে বিভিন্ন জেলায় তাদের পরিবার বসবাস করায় শিল্পীকে কিশোর জীবনে বিভিন্ন জেলায় বসবাস করতে হয়।

ঢাকার পোগস স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর ১৯৫০ সালে ঢাকা আর্ট কলেজে ভর্তি হন তিনি। এ সময়ে তিনি বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকে সুনাম অর্জন করেন। ১৯৬২ সালে এশিয়া ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে তিনি স্নাতক সম্পন্ন করেন। ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। ঢাকা আর্টস কলেজে ‘ ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং’ বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রদের নিয়ে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৭১ সালে শিল্পী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অর্থ, কাপড় ও খাদ্য সংগ্রহ করেন। ১৯৭৩ সালে ‘ এথেন্স স্কুল অব ফাইন আর্টস’ থেকে ‘ প্রিন্ট ম্যাকিং’ বিষয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন এবং দেশে ফিরে ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। সেই থেকে ১৯৯৭ পর্য়ন্ত শিল্পী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে অবসরে যান। শিল্পী বর্তমানেও শিল্পকর্মে ব্যস্ত রয়েছেন।

শিল্পক্ষেত্রের কর্মজীবনে রফিুকন নবী গ্রন্থের প্রচ্ছদ আকাঁ ও বইয়ের অলংকরণের কাজে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। তার ‘কার্টুন ’ ও ‘টোকাই সিরিজ দুটি দেশ-বিদেশে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। সমাজ বাস্তবতাকে শিল্পী এই দুটি সিরিজের মধ্যদিয়ে উপস্থাপন করেছেন। সত্তর দশকের মধ্যভাগ থেকে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় শিল্পী কার্টুন আঁকা শুরু করেন। কার্টুনের বিষয়, সংলাপ, তথ্য ও সংবাদ- পাঠক ও শিল্পপ্রেমীদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। এই সিরিজের পরে তার আরেক সৃষ্টি ‘ টোকাই ’ সিরিজ। সাপ্তাহিক ‘ ২০০০’ সহ অন্যান্য পত্রিকা ও মাধ্যমেও শিল্পী এ দুটি সিরিজের কাজ করেন। 

এ বিষয়ে শিল্পী রফিকুন নবী এক সাক্ষাৎকারে বলেন, কার্টুন ও টোকাই শুধু সমাজের নানা বাস্তবতাকেই ধারণ করেনি, রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রের ভালমন্দও উঠে এসেছে শিল্পসম্মতভাবে। এক একটি কার্টুন এক একটি সংবাদের জন্ম হচ্ছে এবং কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সকে ধারণ করছে। সংলাপ ও বক্তব্যের মাধ্যমে ঘটে যাওয়া বিষয়কে কার্টুন উপস্থাপন করছে।

শিল্প সংস্কৃতি, শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য শিল্পীকে সরকার একুশে পদক প্রদান করেছে। পেয়েছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার,বইয়ের প্রচ্ছদের জন্য ১৩বার পুরস্কৃত হন। মীরপুর জল্লাদখানা, বিটিভি,শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি জোন, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিল্পীর শিল্পকর্ম স্থাপনা রয়েছে। তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, টোকাই (দুই খন্ড), রাজা রাখালের গল্প, বাংলাদেশের লোকছড়া প্রভৃতি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত