র‌্যাগিংয়ে জড়িতদের বহিষ্কারের দাবি রাবি ছাত্রলীগের

প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০১৮, ১৬:৫৫

রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িত একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমীনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ।

মঙ্গলবার দুপুরে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, ক্রুপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমীন তার নিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থী ফাহাদ বিন ইসমাইলসহ অনেক শিক্ষার্থীকে অমানবিক র‌্যাগিং করেছে। পরবর্তীতে ফাহাদ ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়ি চলে যায় এবং অন্যান্য শিক্ষার্থী আমাদের কাছে এসে র‌্যাগিংয়ের কারণে অভিযোগ করে। আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা পরবর্তীতে র‌্যাগিংয়ের মূলহোতা আল-আমীনকে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানতে পারি- সে একজন শিবির ক্যাডার। ইতোমধ্যে সে দুইবার শিবিরের নাশকতায় জড়িত থাকার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি যে-ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের সভাপতি ও অন্যান্য বিএনপি জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়েছে। সেখানে তারা আল-আমীন র‌্যাগিং করেনি সে বিষয়টি উল্লেখ করেছে। অর্থ্যাৎ ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের সভাপতি ও অন্যান্য বিএনপি জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা বিভিন্ন মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের মাধ্যমে আল-আমীনের অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করেছে। সুতরাং, আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, উক্ত র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিবির ক্যাডার আল-আমীনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের যেসব শিক্ষকের প্রত্যক্ষ মদদে বিভাগে উক্ত র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, মাননীয় উপাচার্য স্যার আমাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন। ক্যাম্পাসে র‌্যাগিংয়ের মত ঘটনা ঘটুক আমরা তা চাই না। এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। শিবির নেতা আল আমীনসহ তাকে যারা শেল্টার দিচ্ছে সেই সকল শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।’

উল্লেখ্য, গত ২৫ জানুয়ারি গত বৃহস্পতিবার ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের প্রথমবর্ষের চার শিক্ষার্থীকে অমানবিক র‌্যাগিং করে বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এদিন দুপুর বেলা ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তাদেরকে র‌্যাগিং করা হয়। র‌্যাগিংয়ের নামে দুপুরে ক্লাস রুমের ভেতরে তাদেরকে নানা রকম অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী। এরপর বিকেল ৪টা থেকে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমীন সরকারের নেতৃত্বে ৫-৬ জন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা মাঠ এবং ফিশারিজ বিভাগের পুকুর পাড়ে প্রথমবর্ষের চারজন শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিং করা হয়। এরমধ্যে সাকিব নামের এক শিক্ষার্থীর প্যান্ট খুলে পুকুরে নামিয়ে রাখেন তারা। আর ইসরাফিল নামের অপর এক শিক্ষার্থীর জামা কাপড়ও খুলে নেন তারা। অপর দুইজন শিক্ষার্থীকে হিজড়া সাজিয়ে নানা রকম অঙ্গভঙ্গি করতে ও মুরগী সাজতে বাধ্য করেন তারা।

ঘটনাটি নিয়ে পরের দিন ২৬ জানুয়ারি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই রাবিসহ পুরো বাংলাদেশ র‌্যাগিয়ের বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই এই ঘটনার নিন্দা জ্ঞাপন করেন ও জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত