রাবি শিক্ষার্থী প্রীতি বাঁচতে চায়, মানবিক সাহায্যের আবেদন

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:২৭

সাহস ডেস্ক

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। মানুষের জীবন বাঁচাতে মানুষই পাশে দাঁড়ায়, সহায়তার হাত বাড়ায়। তাই এভাবেই যদি সমাজের বিত্তবান থেকে শুরু করে সবাই সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়ায় তাহলে বেঁচে যেতে পারে প্রীতি।

লিভারের জটিল রোগে আক্রান্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী খাদিজা জাকির প্রীতি। একরাশ স্বপ্ন নিয়ে নানা বাঁধা অতিক্রম করে ভর্তি হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু দেহে বেঁধেছে জটিল রোগের বাসা। তবে প্রীতি রোগের কাছে হারতে নারাজ। সে বাঁচতে চায়। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা। অসহায় বাবার একমাত্র মেয়েকে বাঁচাতে জমিজমা বিক্রি করেও মেয়ের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে পারেননি। শেষ চেষ্টা হিসেবে মানবিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে তিনি।

প্রীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নাগরপুর গ্রামে। বাবা মো. জাকির হোসেন, মা ফরিদা আক্তার চাকরি সূত্রে ঢাকার ডেমরায় ভাড়া বাসায় থাকেন। পরিবারের দুই বোনের মধ্যে প্রীতি বড়।

জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের বার্ষিক বনভোজনে শরীর খারাপ হয়ে রক্ত বমি করে প্রীতি। এ সময়  তাকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে (রামেক) নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, লিভারের জটিল রোগ দেখা দিয়েছে। এরপর তাকে ঢাকার বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

প্রীতির পরিবার সূত্রে জানা যায়, তার গ্যাস্ট্রিকে সমস্যা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তা লিভার সিরোসিস নামক একধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। সুস্থ হতে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট অপারেশন অথবা লিভারে রিং বসাতে হবে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এই রোগের উন্নত চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই। তাই ভারতে গিয়ে তার চিকিৎসা করাতে হবে।

প্রীতির সহপাঠী মার্জিয়াতুন নাহার লুবনা বলেন, শীতকালীন বন্ধের আগে প্রীতি কয়েকবার রক্ত বমি করে। এরপর রাজশাহী মেডিকেলে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বলে জানায়। গত দুইদিন আগে লিভারে সিরোসিস ধরা পড়ে। তার চিকিৎসা জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। বিভাগে শিক্ষার্থীরা চিকিৎসার জন্য অর্থসংগ্রহ করছি। রাজশাহীর টি-বাঁধ, আই-বাঁধসহ বিভিন্ন জাগায় প্রায় ১৬ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে প্রীতির চিকিৎসার জন্য অর্থসংগ্রহে যাব।

প্রীতির বাবা জাকির হোসেন বলেন, প্রীতির অসুস্থতার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা স্যারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি প্রীতির চিকিৎসার জন্য সাহায্য করতে চেয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রীতির বিভাগের বড় আপু-ভাইয়েরা সবসময় যোগাযোগ রাখছে। তার বিভাগের শিক্ষার্থীরা চিকিৎসার জন্য অর্থসংগ্রহ করছে। সবাই সবার জায়গা থেকে সহযোগিতা করছে।

জাকির হোসেন আরও বলেন, চিকিৎসার জন্য এরই মধ্যে প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে। লিভার ট্রান্সপ্লান্টের জন্য প্রয়োজন প্রায় ৩০-৪০ লাখ টাকা। ঢাকার উত্তরখানের একটি জমির অংশ ও গ্রামের পৈতৃক কিছু সম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা করছি। তারপরও আরও অনেক টাকা প্রয়োজন। আমার মাত্র দুইটা মেয়ে। তারাই যদি না থাকে তাহলে এসব জমি-জায়গা দিয়ে কি হবে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা বিভাগের শিক্ষকেরা এ বিষয়ে অবগত আছি। প্রীতি শিক্ষার্থী হিসেবে ভালো। তার সুস্থতার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। আমরা আমাদের জায়গা থেকে যতটা পারি চেষ্টা করছি তার চিকিৎসা জন্য আর্থিকভাবে সহায়তা করার। বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তানের মতো।

প্রীতির ভারতের কোথায় চিকিৎসা করানো হবে জানতে চাইলে বাবা জাকির হোসেন বলেন, এরই মধ্যে ভিসার কাজ সম্পন্ন করেছি। চিকিৎসার জন্য ভারতের কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে চেন্নাইয়ের রেলা ইনস্টিটিউটে তার চিকিৎসা করার কথা ভাবছি। প্রীতির চিকিৎসায় সহযোগিতা পাঠাতে চাইলে- ডিবিবিএল ব্যাংক একাউন্ট নং-এসি ১২৮-১০১-১২৩১৮০ এবং বিকাশ ও নগদ নম্বর ০১৭১৫১৩০৬১৪।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত