চাকরি প্রত্যাশীকে অপহরণের পর হত্যা চেষ্টা, নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:৪৮

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী নিয়োগে অর্থ বাণিজ্য এবং পরীক্ষার আগের রাতে আকরাম নামে এক চাকরি প্রত্যাশীকে অপহরণের পর হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তীতে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার।

এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফয়েজ আহম্মদ ক্যামেরার সামনে কোন কথা বলে সাংবাদিকের সাথে অসাধু আচরণ করেন। এদিকে স্কুল থেকে ৭ জন চাকরির আবেদন করেছে বলে জানানো হলেও বাস্তবে খোঁজ মেলে ৫ জনের। চলতি মাসের ১৬ তারিখে পুনরায় পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। অপহরণের ঘটনায় লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান নৈশপ্রহরী এবং অপহরণ হওয়া চাকরি প্রত্যাশীর বাবা জহির হোসেন।

জানা যায়, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) নিয়োগ পরীক্ষার আগের রাতে বাসার সামনে থেকে আকরামকে অপহরণ করা হয়। পরের দিন ২৯ ডিসেম্বর (বুধবার) অপহৃতকে অচেতন অবস্থায় চট্রগ্রাম রেল লাইন থেকে উদ্ধার করে স্থানীরা। পরে খবর পেয়ে আকরামকে নিয়ে এসে সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর সদর হাসতালে ভর্তি করে তার স্বজনরা।

অভিযোগ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভবানীগঞ্জ হাই স্কুলে দীর্ঘদিন যাবত (অস্থায়ী নিয়োগ) নাইট গার্ডের চাকরির সুবাদে স্কুল এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন মোঃ জহির। জহিরের দাদাও এই স্কুলের নাইট গার্ড ছিলেন। ইতিমধ্যে নাইট গার্ড পদে স্থায়ী নিয়োগ দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। জহিরের বয়স বেশি হওয়াতে তার ছেলে আকরামসহ ৭ জন আবেদন করে। পিতার সূত্রে আকরাম চাকরি পাবে এমন একটা জনশ্রুত চলছিল।

গত ২৮ ডিসেম্বর বুধবার স্কুল প্রাঙ্গণে নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। পরীক্ষার আগের দিন মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে প্রার্থী আকরাম বাড়ি থেকে চৌরাস্তা বাজারের উদ্দেশে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরেনি। মোবাইল ফোনও বন্ধ। বিভিন্নস্থানে খোজাখুজিঁ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরের দিন বুধবার সকাল ৮টার দিকে ফোন করে জানানো হয়, আকরামকে অজ্ঞান অবস্থায় চট্রগ্রাম রেল লাইনের উপর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। খবর পেয়ে অচেতন অবস্থায় আকরামকে চট্রগ্রাম থেকে এনে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপহরণের খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

চাকরি প্রত্যাশীরা বলেন, আমরা আবেদন করেছি। ২৮ তারিখে পরীক্ষা দিতে গিয়ে জানতে পারি আমাদের একজন পরীক্ষার্থী অপহরণ হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তাই মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পরীক্ষা স্থগিত করেছেন। আগামী ১৬ তারিখ পরীক্ষা হবে জানিয়েছেন তিনি। স্কুলের সভাপতি নাছির উদ্দিন রাজু বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় কোরামপূর্ণ না হওয়াতে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আকরামের অপহরণের বিষয়টি তার বাবা ওই দিন সকালেই আমাকে জানিয়েছে। আকরামের মা মিলন বেগম ও বাবা জহির বলেন, আমার ছেলে যাতে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারে সে জন্য তাকে পরিকল্পিত ভাবে অপহরণ করা হয়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবু তালেব বলেন, নিয়োগের ক্ষেত্রে এক পদে ৩ জন পরীক্ষার্থী হলেই কোরামপূর্ণ হয়। সেখানে তিনের অধিক ছিলো তাই কোরামপূর্ণ হয়েছে। কোরামপূর্ণ হলেও একজন চাকরি প্রত্যাশী অপহরণের ঘটনায় সভাপতির অনুরোধে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি পরীক্ষা শুরুর আগেই জানায় যে নৈশপ্রহরী চাকরি প্রত্যাশী একজন অপহরণ হয়েছে। তাই তিনি পরীক্ষা স্থগিত করার অনুরোধ করলে মানবিক বিবেচনায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, অপহরণের ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি অভিযোগের আলোকে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাহস২৪.কম/এএম.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত