যুবলীগ নেতা-কর্মীদের গ্রামে ফিরে চাষাবাদ করতে বললেন শেখ হাসিনা

প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২২, ১৯:০২

সাহস ডেস্ক

যুবলীগ নেতা-কর্মীদের গ্রামে ফিরে গিয়ে নিজ হাতে চাষাবাদ করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি যুবলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে বলব, যারা এখানে আছেন বা বাইরে আছেন, সবাই নিজের গ্রামে ফিরে যান, সেখানে গিয়ে কোনো জমিজমা অনাবাদী না রেখে, সেটা নিজের হাতে চাষ করতে হবে। কোথাও কোনো জমি যেন অনাবাদী না থাকে সেই ব্যবস্থা প্রতিটি যুবলীগ নেতাকর্মীর করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পরনির্ভরশীল থাকলে চলবে না, আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। তাই আমি আহ্বান করছি, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে।’

আওয়ামী যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন শেখ হাসিনা। এ সময় তার সরকারের নানা উন্নয়ন উদ্যোগের চিত্র তুলে ধরেন। বেলা পৌনে তিনটার দিকে মহাসমাবেশ উদ্বোধন করেন তিনি। এর আগে আওয়ামী লীগের সভাপতি মহাসমাবেশস্থলে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। উদ্বোধনীতে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ ছাড়া বেলুন ও পায়রা ওড়ানো হয়। শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

করোনাকালে যুবলীগের কর্মীরা যেভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, সে জন্য তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি করোনার সময় আহ্বান করেছিলাম, কৃষক ধান কাটতে পারেনি, তারপর যুবলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে। এরপর আমি আহ্বান করেছি, যুবলীগ বৃক্ষরোপণ করেছে। এভাবে মানুষের পাশে আমাদের এখনো দাঁড়াতে হবে।’

এরপর তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা, জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘যুবলীগ আমাদের প্রতিটি আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। জাতির পিতা যুবকদের দায়িত্ব দিতে যুবলীগ গঠন করেছিলেন।’

যুবলীগের মহাসমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আজও আমরা আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রাথমিকের বাচ্চাদের শিক্ষা দিচ্ছি। আমরা বাংলাদেশে হাইটেক পার্ক সফটওয়্যার টেকনোলোজি পার্ক গড়ে তুলছি। আমাদের যুবকরা ট্রেনিং নিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে। এই সুযোগ আওয়ামী লীগ না এলে জীবনেও হতো না।’ এ সময় তিনি আরও যোগ করেন, ‘এইট পাস দিয়ে আর মেট্রিক ফেল দিয়ে দেশ চললে, সেই দেশের উন্নতি হয় না।’

তরুণ সমাজের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তরুণ সমাজের দায়িত্ব দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। যুবলীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।’

এর আগে যুবলীগের মহাসমাবেশ শুরুর আগেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢল নামে নেতা-কর্মীদের। নীল, সবুজ, হলুদসহ নানা রঙের টি-শাট ও টুপি পরে মহাসমাবেশে এসেছেন নেতা-কর্মীরা। মহাসমাবেশে যোগ দিতে সকাল থেকেই যুবলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের হাজারো নেতা-কর্মীকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যেতে দেখা যায়। তারা বাস, পিকআপ, মোটরসাইকেলে করে মহাসমাবেশস্থলের দিকে যান। অনেকে আবার পায়ে হেঁটে মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যান। যুবলীগের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও রাজধানীর সড়কগুলোতে দেখা গেছে যানজট। দুপুরের দিকে বিজয়সরণী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় যানজট ছিল। মহাসমাবেশ উপলক্ষে সকাল থেকেই নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত