র‌্যাবের অভিযানে চাঞ্চল্যকর রুবেল হত্যার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ২

প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২২, ১৮:০৫

শেখ নাদীর শাহ্,খুলনা

গোপালগঞ্জের ক্লুলেস ও লোহমর্ষক রুবেল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার (০২ নভেম্বর) ঢাকার গাজীপুর জেলা থেকে তাদেরকে আটক করে র‌্যাব। আটকৃতরা হলো, খুলনার তেরখাদা উপজেলার হুসাইন ইমাম ও গোপালগঞ্জের এস এম ফেরদাউস।

র‌্যাবের পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অতিলোভী ও দুস্কৃতিকারাী চক্র দেশের বিভিন্নস্থানে নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে আসছিলো। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের উদ্দেশে যায়। ফিরে আসার সময় গাড়ী ভাড়া করে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট গন্তব্যে নিয়ে যায়। এরপর গাড়ীর চালককে মারধরসহ হত্যা করে গাড়ী ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে অন্যত্র বিক্রয় করে। এমনি একটি ক্লুলেস ও লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে।

এরপর ওই ব্যাপারে মুকসুদপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। ঘটনার পর থেকেই র‌্যাবের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও ছায়াতদন্ত চলমান ছিলো। র‌্যাবের তথ্যপ্রযুক্তি, গোয়েন্দাবৃত্তি ও দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এই ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডটির রহস্য উন্মোচন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২ নভেম্বর রাতে গাজীপুর হতে এ ঘটনার মূলহোতা হুসাইন ইমাম ও এস. এম ফেরদাউস গ্রেপ্তার করে।

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা গাড়ির চালক রুবেল হত্যাকাণ্ডের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছে। ইতিপূর্বে আসামিরা অস্ত্র, দস্যুতা ও প্রতারণাসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ায় জেলখানায় তাদের পরিচয় হয়। সেখানে থেকেই গাড়ি ছিনতায়ের প্রাথমিক পরিকল্পনা করে তারা।

এরপর গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে গাজীপুরে একত্রিত হয়ে একটি হোটেলে ঘটনাটির চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে। ১৫ অক্টোবর তারা একত্রিত হয়ে পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটার উদ্দেশে যাত্রা করে। পথিমধ্যে চেতনানাশক ঔষধসহ একটি সিরিঞ্জ ক্রয় করে। তারা কুয়াকাটায় ভ্রমণ শেষে ছিনতাইয়ের উদ্দেশে নতুন ও ব্যয়বহুল গাড়ীর সন্ধান করতে শুরু করে। দুষ্কৃতিকারী চক্রটি একটি নতুন মডেলের ব্যয়বহুল প্রাইভেট কার ভাড়া করে ও ১৬ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে কুয়াকাটা হতে গোপালগঞ্জ জেলার ভাটিয়াপাড়ার উদ্দেশে যাত্রা করে।

পথিমধ্যে চালকের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ আলোচনার মধ্যদিয়ে গাড়ীর মালিক ও গাড়ীতে ব্যবহৃত ট্রাকিং ডিভাইসটির তথ্য সংগ্রহ করে। গাড়ীটি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তারা চালকের সংঙ্গে ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে গাড়ীটি থামিয়ে কৌশলে চালকের দেহে চেতনানাশক ঔষধ প্রয়োগ করে। চালক দুর্বল হয়ে পড়লে তাকে মারধর করে হাত-পা স্কসটেপ দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং মুখমণ্ডলে স্কসটেপ পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

পরবর্তীতে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের একটি নির্জন এলাকায় চালকের মৃতদেহটি ফেলে দিয়ে তারা গাড়ীটি নিয়ে গাজীপুরে পালিয়ে যায়। সর্বশেষ এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে র‌্যাব ওই দু’জনকে আটক করেছে।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত