স্ত্রী হত্যা মামলায় বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পিবিআইয়ের অভিযোপত্র

বাবুল আক্তার ও তার স্ত্রী নিহত মাহমুদা খানম। ছবি: সংগৃহীত

স্ত্রী মাহমুদা খানম হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মুহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় প্রতিবেদনটি জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ‘অভিযোগপত্রে বাদী বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে ৯৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।’

অভিযোগপত্রে বলা হয়, অন্য নারীর সঙ্গে বাবুলের সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের জেরে বাবুলের পরিকল্পনায় স্ত্রী মাহমুদাকে খুন করা হয়। এ জন্য বাবুল তার সোর্সের (তথ্যদাতা) মাধ্যমে তিন লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করেন। পিবিআইয়ের তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

অভিযোগপত্রে বাবুলকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। তিনি ছিলেন এই মামলার বাদী। অভিযোগপত্রভুক্ত বাকি ছয় আসামি হলেন মো. কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম ওরফে কালু ও শাহজাহান মিয়া। এই সাত আসামির মধ্যে কারাগারে আছেন বাবুল, ওয়াসিম, শাহ জাহান ও আনোয়ার। জামিনে আছেন এহতেশামুল। শুরু থেকে পলাতক আছেন মুসা ও কালু।

অভিযোগপত্রে চারজনকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। তারা হলেন সাইদুল ইসলাম শিকদার ওরফে সাক্কু, নুরুন্নবী, মো. রাশেদ ও আবু নাছের। তাদের মধ্যে রাশেদ ও নুরুন্নবী ঘটনার পরের সপ্তাহে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।

বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম হত্যা মামলার ‘কেস ডকেট’। ছবি: সংগৃহীত

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাবুল কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেখানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মকর্তার সঙ্গে বাবুলের সম্পর্ক হয়। এই সম্পর্কের জেরে বাবুলের পরিকল্পনায় মাহমুদাকে খুন করা হয়। মাহমুদাকে খুনে বাবুল তিন লাখ টাকা দেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরের জিইসি এলাকায় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। তখন মাহমুদা ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়েছিলেন। এর পরের দিন ৬ জুন বাবুল বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পিবিআই গত বছরের ১২ মে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। একই দিন বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়। মোশাররফের মামলায় পিবিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলে আদালত তা গ্রহণ করেন। অন্যদিকে বাবুলের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ করেননি। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করে অভিযোগপত্র দিল পিবিআই।