মৈত্রী-বন্ধন ফের চালু

প্রকাশ : ২৯ মে ২০২২, ২০:৫৩

সাহস ডেস্ক

দুই বছরের বেশি সময় পর বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। রবিবার (২৯ মে) ১৬৫ জন যাত্রী নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে কলকাতার উদ্দেশে ছেড়ে যায় মৈত্রী এক্সপ্রেস। সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে। এখন থেকে সপ্তাহে পাঁচদিন ঢাকা-কলকাতা রুটে নিয়মিত চলাচল করবে এই ট্রেন। অন্যদিকে একইদিন খুলনা-কলকাতা রুটে চালু হয়েছে বন্ধন এক্সপ্রেস। কলকাতা থেকে ছেড়ে এসে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে খুলনা রেলস্টেশনে পৌঁছায় ট্রেনটি। আগের মতই বন্ধন এক্সপ্রেস সপ্তাহে দুইদিন নিয়মিত চলাচল করবে। দুই বছর বাদে ট্রেন চলাচলে এ সকল রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের মধ্যে দেখা গেছে উৎসাহ।

মৈত্রী এক্সপ্রেসের আনুষ্ঠানিক যাত্রার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার। এ সময় তিনি জানান, ‘ঢাকা-কলকাতা রুটের এই ট্রেনটি সপ্তাহে পাঁচদিন চলাচল করবে। ট্রেনটিতে মোট আসন রয়েছে ৪৫৬টি। কিন্তু প্রথম দিনেই মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীসংখ্যা ছিল অর্ধেকেরও কম।’ তিনি জানান, ‘১৭০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ভারতীয় যাত্রী ছিলেন ১৬ জন এবং একজন ইন্দোনেশিয়ার। তবে দীর্ঘ বিরতি কাটিয়ে ট্রেনে করে ভারতগামী যাত্রীরা আনন্দিত।’ মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর ২০২০ সালের ১৫ মার্চ থেকে মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেসে যাত্রী পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। এর এক বছর পর মিতালী এক্সপ্রেস উদ্বোধন করা হয়। পরে ঈদুল ফিতরের আগে আকাশ ও সড়কপথে পুরোদমে যাতায়াত চালু হলেও ঝুলে ছিল রেল যোগাযোগ।’ মৈত্রী এক্সপ্রেস প্রসঙ্গে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশনের স্টেশনের ম্যানেজার লিটন চন্দ্র দে জানান, ‘ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করেছে। বিকেল চারটায় ট্রেনটি কলকাতা স্টেশনে পৌঁছাবে বলে আশা করছি। সোমবার (৩০ মে) আবার কলকাতা থেকে যাত্রী নিয়ে বিকেল চারটায় ঢাকায় আসবে।

অন্যদিকে রবিবার (২৯ মে) সকাল ৭টা ১০ মিনিটে কলকাতার চিৎপুর আন্তর্জাতিক রেলস্টেশন থেকে ১৯ জন যাত্রী নিয়ে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে খুলনায় এসে পৌঁছায় বন্ধন এক্সপ্রেস। এক ঘণ্টা বিরতির পর দুপুর দেড়টায় খুলনা থেকে আবার ৪৫ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা করে ট্রেনটি। খুলনা রেলস্টেশনের মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার  বলেন, ‘দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল ট্রেনটি। আজকের যাত্রায় যাত্রী কিছুটা কম রয়েছে। পরবর্তীতে যাত্রী আরও বাড়বে। প্রতি বৃহস্পতি ও রবিবার দুই দিন খুলনা-কলকাতা রুটে ট্রেনটি চলাচল করবে।’ ট্রেনের ভাড়া ও ভ্রমণ কর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে ট্রেনের এসি চেয়ার টিকিটের মূল্য ১ হাজার ৫৩৫ টাকা এবং কেবিনের ভাড়া ২ হাজার ২৫৫ টাকা।’ রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর কলকাতা-খুলনার মধ্যে ৪৫৬ আসনের ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ নামের আন্তর্জাতিক ট্রেনটি চলাচল শুরু হয়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ ট্রেনে কেবিনে সিট ভাড়া দেড় হাজার ও চেয়ার কোচ ভাড়া এক হাজার টাকা। সঙ্গে যোগ হয় ৫০০ টাকার ভ্রমণ কর।

বেনাপোল স্থলবন্দরে যাত্রীর পাসপোর্ট, ভিসাসহ ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর যাত্রীরা সরাসরি খুলনা ও কলকাতার মধ্যে যাতায়াত করতে পারেন। ট্রেনটির ৪৫৬ আসনের মধ্যে ৩১২টি এসি চেয়ার ও ১৪৪টি প্রথম শ্রেণির আসন রয়েছে। কলকাতা-খুলনার মধ্যে দূরত্ব ১৭২ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশে পড়েছে ৯৫ কিলোমিটার ও ভারতে পড়েছে ৭৭ কিলোমিটার। বন্ধন এক্সপ্রেস সকাল ৭টা ১০ মিনিটে কলকাতা থেকে যাত্রী নিয়ে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে বেনাপোল স্টেশনে পৌঁছাবে। পরে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে পৌঁছাবে ১২টা ৩০ মিনিটে। খুলনা থেকে আবার যাত্রী নিয়ে দুপুর দেড়টায় রওনা দিয়ে বেনাপোল পৌঁছাবে বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে। পরে বেনাপোলে রেলওয়ে ইমিগ্রেশনে পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে রওনা দিয়ে কলকাতা পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে।

মৈত্রী এক্সপ্রেস ঢাকা-কলকাতার মধ্যে চলাচল করবে। বন্ধন চলবে খুলনা-কলকাতা পথে। আর মিতালী এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে নিউজলপাইগুড়ির পথে চলাচল করবে। ১ জুন চালু হবে মিতালী এক্সপ্রেস। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে খুলনা-কলকাতা রুটে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ চালু হয়। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের ১৫ মার্চ থেকে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলাচলকারী সকল ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

সাহস২৪.কম/এআর/এসটি/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত