সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকা বেতন চান সরকারি কর্মচারীরা

প্রকাশ : ২২ মে ২০২২, ১৮:১৯

সাহস ডেস্ক

সরকারি কর্মচারীদের বেতন সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকা ও নবম জাতীয় পে-কমিশন গঠনসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবী বাস্তবায়ন ঐক্য ফোরাম। রবিবার (২২ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় সংগঠনটি।

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নবম পে-স্কেল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালের জন্য ১১-২০তম গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা, শতভাগ পেনশন, স্বেচ্ছায় অবসরে চাকরির বয়সসীমা ২০ বছর নির্ধারণ এবং আনুতোষিক প্রতি ১ টাকায় ৩০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে এবং পে-কমিশনে কর্মচারীর প্রতিনিধি রাখতে হবে।

সংগঠনের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে- সচিবালয়ের মতো সচিবালয়ের বাইরে সকল দপ্তর ও অধিদপ্তরে কর্মরত কর্মচারীদের পদবী ও গ্রেড পরিবর্তনসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জন্য এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি প্রণয়ণ করা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের প্রথম শ্রেণী ও সহকারী শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণী কর্মকর্তার পদমর্যাদা ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি প্রদান করতে হবে। ব্লক পদ প্রথা প্রত্যাহার করতে হবে। পদোন্নতিযোগ্য পদ শূন্য না থাকলেও নির্ধারিত সময়ের পর উচ্চতর পদের বেতন স্কেল প্রদান করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদেরকে যৌক্তিকভাবে ঝুঁকি ভাতা প্রদান করতে হবে এবং আউট সোর্সিং নিয়োগ প্রথা বিলুপ্ত করতে হবে। ১১-২০তম গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। টাইম স্কেল-সিলেকশন গ্রেড, টেকনিক্যাল কর্মচারীদের জন্য দুটি বিশেষ ইনক্রিমেন্ট পুনর্বহাল করতে হবে। এলাকা ভেদে ৭০ থেক ১০০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া, সামঞ্জস্যপূর্ণ চিকিৎসা ভাতা, টিফিন ও যাতায়াত ভাতা প্রদান করতে হবে।

ফোরামের আহ্বায়ক হেদায়েত হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, '২০১৫ সালে ঘোষিত বেতন স্কেলে শুভঙ্করের ফাঁকির মধ্যে ১১-২০তম গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের বিভিন্নভাবে ঠকানো হয়েছে, বৈষম্যে নিপতিত করা হয়েছে। ১১-২০তম গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের মধ্যে সৃষ্ট বৈষম্য, আর্থিক দৈন্যতাসহ সার্বিক বিষয় নিরসনের জন্য বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন হতে সরকারের কাছে বিভিন্ন সময়ে দাবি পেশ করলেও তা উপেক্ষিত হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের দাম ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধির দৃষ্টান্ত আমাদের দেশের প্রচলিত প্রথা। এরই মধ্যে গত দুবছরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে নিত্যপণ্যের মূল্য। ফলে নিম্ন বেতনভুক্ত কর্মচারীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক দৈন্যতায় নিপতিত প্রজাতন্ত্রের ১১-২০তম গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের প্রতিনিধিত্বকারী সমমনা সংগঠনসমূহ একাধিক মতবিনিময় সভায় মিলিত হয়ে একটি মঞ্চে এসে এক ও অভিন্ন দাবি সরকারের নিকট পেশ করছি।'

তিনি আরও বলেন, '১৯৭৭ সালে ২০টি গ্রেডে বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করে যে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয় তা পরের প্রতিটি বেতন স্কেলেই অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৫ সালের সচিবালয়ের সঙ্গে সচিবালয়ের বাইরের কর্মচারীদের মধ্যে পদবি বৈষম্য সৃষ্টি করে এ বৈষম্যকে আরেক দফা বৃদ্ধি করা হয়। এরপর থেকেই বৈষম্য আর অবহেলাকে ঘিরে কর্মচারীদের ন্যায্য আন্দোলন চলতে থাকলেও তার অবসান হয়নি। বরং বিভিন্ন কৌশলে এ বৈষম্যকে আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দিন বদলের কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে রূপকল্প ২০২০-২১ বাস্তবায়নে ব্যাপক জনমত নিয়ে দেশ গড়ার যাত্রা শুরু করলে আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম যে বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত দিয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সব বৈষম্যের অবসান হবে। কিন্তু আমাদের দেখা সে স্বপ্ন, এখনো স্বপ্নই রয়ে গেল।'

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সমন্বয়ক মো. লুৎফর রহমান, মুখ্য সমন্বয়ক মো. ওয়ারেছ আলী সহ আরও অনেকে।

সাহস২৪.কম/এআর/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত