দুর্নীতির মামলায় হাজী সেলিম কারাগারে

প্রকাশ : ২২ মে ২০২২, ১৭:৪৩

সাহস ডেস্ক

দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত পুরান ঢাকার সংসদ সদস্য হাজী সেলিম জামিন আবেদন করেছেন। আত্মসমর্পণ করতে তার আদালতে যওয়ার খবরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের সামনে ভিড় করেছেন নেতাকর্মীরা। তবে তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার (২২ মে) তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলাম।

এর আগে দুপুর ২টার দিকে তিন ছেলেকে নিয়ে গাড়িতে করে হাজী সেলিম আদালত প্রাঙ্গণে আসেন। সেখানে আগে থেকে তার অনুসারীরা অপেক্ষা করছিলেন এবং নানা স্লোগান দিচ্ছিলেন। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর হাজী সেলিম প্রবেশ করেন আদালত ভবনে।

দুপুরের আগেই তিনটি আবেদন করা হয়েছিল হাজী সেলিমের পক্ষে। এর একটিতে আপিলের শর্তে জামিন চাওয়া হয়েছে। যদি কারাগারে পাঠানো হয়, তাহলে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা চাওয়া হয়েছে দ্বিতীয় আবেদনে। আর তৃতীয় আবেদনে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ চাওয়া হয়েছিল।

এদিকে দুপুর থেকেই আদালতের বাইরে ভিড় শুরু করেন তার সমর্থক ও নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আদালতের মূল ফটকে উপস্থিতি ছিল বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যের। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সেলিমকে দেওয়া বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছর কারাদণ্ড বহালের রায়ের নথি হাইকোর্ট থেকে গত ২৫ এপ্রিল নিম্ন আদালতে পাঠানো হয়। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ওই দিন বলেছিলেন, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী ২৫ এপ্রিল থেকে ৩০ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে হাজী সেলিমকে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই আত্মসমর্পণ করতে এসেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল এ মামলায় তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের আগের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টেই শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। ২০২১ সালের ৯ মার্চ বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছিলেন।

রায় ঘোষণার পর দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, দুদক আইনে (২৬ এর ২ ধারা) করা মামলায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে হাজী সেলিমকে ৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। সেই অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় হাজী সেলিমকে তথ্য গোপনের অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। কিন্তু দুদক আইনের ২৭ (১) ধারা অনুসারে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ওই অভিযোগে তার সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশের রায় দেন আদালত।

সাহস২৪/এসটি/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত