আলোচিত শিশু হত্যা মামলায় ৬ জনের ফাঁসি

প্রকাশ : ১২ মে ২০২২, ১৮:৩১

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

দীর্ঘ ১১ বছর পর টেকনাফে চাঞ্চল্যকর মো. আলী উল্লাহ আলো (০৭) হত্যা মামলায় ছয় জনের ফাঁসি আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১১ মে) সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি ফরিদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ফরিদুল আলম বলেন, শিশু আলো (০৭) হত্যার রায়ের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। অপরাধ যেই করুক শাস্তি তাকে পেতেই হবে। এই হত্যা মামলার রায়ে আমি সন্তুষ্ট। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী সেলিম উদ্দীন রাজু বলেন, তিনি ও তার মক্কেল এ রায়ে অসন্তুষ্ট, এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, নওগাঁর মো. সুমন আলী (২৬), ঠাকুরগাঁওয়ের ইয়াছিন ওরফে রায়হান (২৯), কুমিল্লার মো. ইয়াকুব (৩৪), টেকনাফের মো. ইসহাক ওরফে কালু (৩১) নজরুল ইসলাম (২৮) ও সৈয়দুল আমিন ওরফে লম্বাইয়া। তাদের মধ্যে সুমন আলী, নজরুল ইসলাম ও সৈয়দুল আমিন পলাতক রয়েছেন। এছাড়া এ মামলায় মহিবুল্লাহ (৪৫) ও দিদার মিয়াকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আলাদত। এদের মধ্যে দিদার মিয়া কারাগারে রয়েছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদারবিল এলাকার বাসিন্দা রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও ফারজানা পারভীন সুইটির ৭ বছরের শিশু পুত্র মো. আলী উল্লাহ আলোকে মোহাম্মদ আবদুল্লাহর কর্মচারী মো. সুমন আলী অপহরণ করে। পরে পাখির বাসা দেখানোর কথা বলে মো. আলী উল্লাহ আলোকে কাচারি ঘরের ছাউনির ওপরে উঠিয়ে তার হাত-পা বেঁধে মুখে জোর করে কচটেপ লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় মো. আলী উল্লাহ আলো চিৎকার করে। তখন মো. সুমন আলী ও অন্যান্য আসামিরা আলোকে ছাউনির সিলিংয়ের উপর গলা কেটে হত্যা করে। এঘটনায় মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বাদী হয়ে ২০১১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে টেকনাফ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি পর্যায়ক্রমে টেকনাফ থানার এসআই মাহবুবুর রহমান, এসআই হারুনর রশীদ এবং টেকনাফ থানার ওসি (তদন্ত) স্বপন কুমার মজুমদার তদন্ত করে আসামী মো. ইয়াকুব, ইয়াসিন ও ও সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেন। তারা আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। কিন্তু বাদী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ পুলিশের চার্জশিটের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর আদালতে নারাজী আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত বাদীর নারাজীর আবেদন গ্রহণ করেন এবং ২০১৪ সালের ৪ মার্চ মামলাটি সিআইডিকে অধিকতর তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন।

২০২০ সালের ২৪ জুলাই কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত মামলাটির চার্জ গঠন করে বিচারকার্য শুরু করেন। মামলায় প্রয়োজনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে বিচারক বুধবার (১১ মে) এই রায় ঘোষণা করেন।

সাহস২৪.কম/এএম/এমআর/এসএ.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত