শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী মারা গেছেন

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯:০২

সাহস ডেস্ক

মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখা শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী মারা গেছেন। মৃত্যুর আগের তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।

সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেগম মুশতারী শফীর জামাতা আবদুল্লাহ জাফর।

আবদুল্লাহ জাফর বলেন, আজ বিকেল চারটার দিকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেগম মুশতারী শফী হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মুশতারী শফী কিডনি, রক্তে সংক্রমণসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। ২ ডিসেম্বর তাকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আনা হয়। এরপর কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন যান। পরে আবার ১৪ ডিসেম্বর থেকে সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত মুশতারী নারীনেত্রী ও শব্দসৈনিক। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৭ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীরা তার স্বামী চিকিৎসক মোহাম্মদ শফী ও ছোট ভাই এহসানুল হক আনসারীকে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিক হিসেবে কাজ করেছেন বেগম মুশতারী। মুক্তিযুদ্ধে অনন্য ভূমিকার জন্য ২০১৬ সালে মুশতারী শফীকে ফেলোশিপ দেয় বাংলা একাডেমি। ২০২০ সালে পেয়েছেন বেগম রোকেয়া পদক।

চট্টগ্রামে নারী অধিকার আদায় ও সুরক্ষার জন্য দীর্ঘদিন কাজ করেছেন মুশতারী শফী। বাংলাদেশ ঘাতক দালাল নির্মূল আন্দোলনের একজন অন্যতম সংগঠক তিনি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ ‘মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের নারী’, ‘চিঠি’, ‘জাহানারা ইমামকে’ এবং ‘স্বাধীনতা আমার রক্তঝরা দিন’ মুশতারী শফীর উল্লেখযোগ্য রচনা।

১৯৬৩ সালে চট্টগ্রাম থেকে ‘বান্ধবী’ নামে মাসিক সাময়িকী প্রকাশ করেছিলেন মুশতারী শফী। বাংলাদেশে নারীদের জন্য প্রকাশিত দ্বিতীয় সাময়িকী বলা হয় ‘বান্ধবী’কে। বান্ধবী সংঘ প্রচারের সময় মেয়েদের প্রেস নামে একটি ব্যতিক্রমী মুদ্রণ সংস্থাও গড়ে তুলেছিলেন লড়াকু এই নারী।

বেগম মুশতারী শফী ১৯৩৮ সালের ১৫ জানুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলার ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত